ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে নিজের সন্তানকে অপহরণের নাটক সাজানোর দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাবা আব্দুল্লাহ আল এলিনকে (৩২)।ছেলেকে একই জেলার বিরামপুরে নিজের দাদা-দাদীর কাছে লুকিয়ে রেখে মিথ্যা অপহরণের নাটক সাজিয়ে ধোঁকা দেওয়ার অভিযোগে বাবা আব্দুল্লাহ আল এলিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে স্ত্রী বাবলি খাতুন।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর স্বামীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আটক বাবা শিকার করে, সে তাঁর সন্তানকে জেলার বিরামপুর পৌরশহরে দাদা-দাদীর কাছে লুকিয়ে রেখেছেন। পরে পুলিশ গিয়ে শিশু রাফিনকে উদ্ধার করে।
পুলিশ সুত্র জানায়, ঘোড়াঘাট উপজেলার চাটশাল সোনারপাড়া এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে বাবলি খাতুনের সাথে বিরামপুর উপজেলার থানাপাড়ার নজরুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ আল এলিনের বিয়ে হয়। ঘর সংসার করা কালে স্ত্রী বাবলি জানতে পারেন, এর আগেও তাঁর স্বামীর অন্য এক জায়গায় বিয়ে করেছিলেন এবং ওই পক্ষের একটি সন্তানও আছে। বিয়ের বিষয়টি গোপন করা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায়শই কথা কাটা কাটি হয়। পরবর্তীতে বাবলিও একটি পুত্র সন্তানের মা হন। সন্তান জন্মের পর থেকে তাঁর স্বামী বিভিন্ন সময়ে টাকার জন্য শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক সময় স্ত্রী বাবলি তার মায়ের বাসা ঘোড়াঘাট উপজেলার চাটশাল সোনারপাড়া এলাকায় চলে আসেন। পরে স্বামী এলিনও তার বাবার বাড়ি থেকে স্ত্রী বাবলির গ্রামে এসে জায়গা ক্রয় করেন। সেখানে স্বামী-স্ত্রী মিলে ঘর সংসার করতে থাকেন। কিছু দিন পর থেকে এখানেও আবারো টাকার জন্য তার ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চলতে থাকেন স্বামী। এ ঘটনার আনুমানিক একমাস পূর্বে বাবলি খাতুন সন্তানকে নিয়ে একই গ্রামে মায়ের বাসায় ফিরে যায়। স্বামী এলিন সেখানে গিয়েও প্রায় সময় হুমকি দিয়ে বলতেন, যে ভাবেই হোক না কেন, টাকা সে আদায় করবেই। এরই মধ্যে গত ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ টায় শিশু সন্তান রাফিন তার নানির উঠানে খেলা করার সময় তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। সন্তানকে অনেক খুঁজাখুঁজি করে না পেয়ে থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন বাবলি খাতুন।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, এটি একটি সাজানো ঘটনা। এই পরিকল্পিত মিথ্যা অপহরণের ঘটনার কারণে আব্দুল্লাহ আল এলিন টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল। শিশু রাফিনকে উদ্ধার করে তার মা বাবলি খাতুনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামীকে দিনাজপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।