নিজস্ব প্রতিবেদক◊
নরসিংদীর মনোহরদী আতুশাল এলাকা হতে দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাত চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল (১৯ সেপ্টেম্বর) সোমবার গভীর রাতে মনোহরদী থানাধীন আতুশাল এলাকায় ঢাকা-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক এবং ব্যাংকের এটিএম বুথে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণকালে দেশীয় অস্ত্র, ককটেল ও খেলনা পিস্তলসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ১১ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডাকাত চক্রের গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো:-১। মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক (৫৮), পিতা- মৃত. ছায়েব আলী, সাং- জামালপুর, থানা- মনোহরদী, জেলা- নরসিংদী, ২। মোঃ আনোয়ার হোসেন @ বাবুল (৩৫), পিতা- মৃত আঃ করিম, সাং- মিরাজনগর বি-ব্লক, থানা- কদমতলী, জেলা- ডিএমপি, ঢাকা, ৩। মোঃ জব্বার @ লিটন (৪৮), পিতা- মৃত আঃ করিম, সাং- মিরাজনগর বি-ব্লক, থানা- কদমতলী, জেলা- ডিএমপি, ঢাকা, ৪। মোঃ রবিউল ইসলাম (৪৭), পিতা- মৃত নুরুল ইসলাম, সাং- সেনের বাজার, থানা- তেরখাদা, জেলা- খুলনা, ৫। রাশেদুল ইসলাম (৩৬), পিতা- মৃত শওকত আলী, সাং- মদিনাবাগ, থানা- কদমতলী, জেলা- ডিএমপি, ঢাকা, ৬। সজিব খান (৩০), পিতা- মৃত একুব আলী খান, সাং- খুচনি চুড়া, থানা- বামনা, জেলা- বরগুনা, ৭। মোঃ জাকির (২৮), পিতা- মোঃ আসাদ মিয়া, সাং- কদমচাল, থানা- অষ্টগ্রাম, জেলা- কিশোরগঞ্জ, ৮। মোঃ হোসেন মিয়া (৫২), পিতা- মৃত জয়নাল হাজী, সাং- মাইজদী, থানা- শ্রীমঙ্গল, জেলা- সিলেট, ৯। মোঃ জাকির হোসেন (৩২), পিতা- মোঃ আবু জাফর, সাং- মিয়াপুর, থানা- সোনাইমুড়ী, জেলা- নোয়াখালী, ১০। মোঃ রিপন (২৭), পিতা- মোঃ আমির উদ্দিন @ আমিরুল, সাং- সাকচর, থানা- লক্ষ্মীপুর, জেলা- ল²ীপুর এবং ১১। মোঃ সবুজ (৩৮), পিতা- মৃত মনা মিয়া, সাং- গোয়াবাড়ী, থানা- মুন্সিগঞ্জ, জেলা- মুন্সিগঞ্জ। উক্ত অভিযানে গ্রেফতারকৃত আসামীদের হেফাজত হতে ককটেল ৫৪ টি, রামদা ০৪ টি, চাইনিজ কুড়াল ০১ টি, চাপাতি ০৩ টি, খেলনা পিস্তল ০১টি এবং হায়েস মাইক্রোবাস ০১ টি উদ্ধার করা হয়।
৩। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে বিভিন্ন থানায় নিম্ন বর্ণিত মামলা রয়েছেঃ
গ্রেফতারকৃত ১নং আসামী মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক (৫৮) এর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে ০৪টি মামলা রয়েছে যথাক্রমেঃ
১। নরসিংদী এর বেলাব থানার এফআইআর নং-৩, তারিখ ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ধারা- ৩৯৯/৪০২ পেনাল কোড-১৮৬০।
২। কিশোরগঞ্জ এর কটিয়াদি থানার এফআইআর নং-৩৩, তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৬, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড-১৮৬০।
৩। নরসিংদী এর মনোহরদী থানার এফআইআর নং-২/১৩৩, তারিখ ০১ জুলাই ২০২০, ধারা- ৩৬(১) সারণির ১০(ক) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮।
৪। নরসিংদী এর বেলাব থানার এফআইআর নং-১, তারিখ ০৩ নভেম্বর ২০১৯, তারিখ ০৩ নভেম্বর ২০১৯, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড-১৮৬০।
গ্রেফতারকৃত ২নং আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন @ বাবুল (৩৫) এর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে ০৪টি মামলা রয়েছে যথাক্রমেঃ
১। নারায়ণগঞ্জ এর আড়াইহাজার থানার এফআইআর নং-৫, তারিখ ০৪ জুন ২০১৮, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/ ৩৮০/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০।
২। নারায়ণগঞ্জ এর আড়াইহাজার থানার এফআইআর নং-১, তারিখ- ০২ আগস্ট ২০১৬, ধারা-১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩৮০/৪২৭/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০।
গ্রেফতারকৃত ৫নং আসামী রাশেদুল ইসলাম (৩৬) এর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে ০১টি মামলা রয়েছেঃ
১। ডিএমপি এর কদমতলী থানার এফআইআর নং-৬৭/৩১০, তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৭ ধারা- ১৯(১)এর১(ক) ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন।
তথ্যমতে, এই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি এর আগেও পরষ্পর যোগসাজশে পূর্ব-পরিকল্পনামাফিক ঢাকা-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়ীসমূহ এবং আশে-পাশের বিভিন্ন বাসা ও দোকানে তাদের ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। গতকাল রাতে তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার বিভিন্ন নির্জন স্থানে গাড়ি ও একই এলাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ ডাকাতি করা। তাদের ডাকাতি কাজের ধরন ছিল ব্যবহৃত মাইক্রোবাস দ্বারা ব্যারিকেড সৃষ্টি করে চলন্ত গাড়ীর গতিরোধ করে অতর্কিতভাবে হামলা করে এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ককটেল ও খেলনা পিস্তল প্রদর্শন করে চলাচলরত যাত্রীসাধারণদের ভয়ভীতি, আতঙ্ক সৃষ্টি শেষে মাইক্রোবাসযোগে দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যাওয়া। দুষ্কৃতিকারী এই ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতি করতে গিয়ে কখনও কখনও জনসাধারণকে মারধর, ছুরিকাঘাত ও গাড়ি ভাংচুরসহ গুরুতর জখম এমনকি প্রাণনাশের মতো ঘটনাও ঘটিয়ে থাকে।
এবিষয়ে র্যাব-১১’র এএসপি মোঃ রিজওয়ান সাঈদ জিকু সকালের কাগজকে জানান, গতকাল গভীর রাতের আধাঁরে সক্রিয় ওই ডাকাত চক্রটি ডাকাতি প্রস্তুতি কালে। আমাদের র্যাবের একটি একটি টিম তাঁদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এবং তাঁদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র উদ্ধার করতে আমরা সক্ষম হই। এখন গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।