নিজস্ব প্রতিবেদক:
আমিনুল হকের আবেদনে তাঁর ক্ষেত্রে হাইকোর্ট ২০০৯ সালে মামলার বিচারকাজের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁর ক্ষেত্রে মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। হাইকোর্টের এই আদেশের কারণে নিম্ন আদালতে পুরো মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকে। এ অবস্থায় রুলের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রুল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ে ২০০৯ সালে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশিত হয়েছে। হাইকোর্টের এই রায় দেওয়ার প্রায় দুই মাসের মাথায় ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন আমিনুল হক।
এই মামলার ১৬ আসামির মধ্যে এরই মধ্যে ছয়জনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। আর দুজনের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। ফলে বর্তমানে খালেদা জিয়াসহ মামলার জীবিত আসামির সংখ্যা ৮। তাঁরা হচ্ছেন খালেদা জিয়া, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক ভারপ্রাপ্ত জ্বালানি সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।
মামলার যেসব আসামির মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা হলেন এম সাইফুর রহমান, আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, মতিউর রহমান নিজামী (মৃত্যুদণ্ড কার্যকর), আলী আহসান মো. মুজাহিদ (মৃত্যুদণ্ড কার্যকর), এম কে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও এ কে এম মোশাররফ হোসেন।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি করার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়। এরপর ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার করা এক আবেদনে তাঁর ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
একই সঙ্গে ব্যারিস্টার আমিনুল হকসহ আরো কয়েক আসামির ক্ষেত্রেও একই আদেশ হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্ট ব্যারিস্টার আমিনুল হক ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে ওই সব রুল খারিজ করে দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হলেও আপিল বিভাগে তা খারিজ হয়। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে আপিল বিভাগ ২০১৭ সালের ২২ মে আপিল খারিজ করে দেন। শুধু ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকে। কিন্তু নিম্ন আদালতে পুরো মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকে।