আজ (১০ আগষ্ট) বুধবার বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান মনির এর পক্ষে রেল ভবনে সকালে রেলওয়ে মহাপরিচালক ডি এন মজুমদারকে সংগঠনের উপদেষ্টা আব্দুর রাজ্জাক মল্লিক এ চিঠি প্রদান করেন ।
চিঠিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে দ্রুত, নিরাপদ, সাশ্রয়ী, আরামদায়ক, সেবামূলক রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা। দেশের যেকোন দূর্যোগপূর্ণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক দূরাবস্থা, মুদ্রামান হ্রাস, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি বিশ্ব বাজারের উঠানামার কারণে প্রতিনিয়ত যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধি করার দাবিতে সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ এমনকি বাস চলাচল বন্ধ করে একের পর এক ভাড়া বৃদ্ধির ফলে জীবনযাপন অসহনীয় পর্যায়ে পৌছেছে। শুধু তাই নয় বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানীসহ মিল-কারখানার উৎপাদনকৃত মালামাল, দ্রব্য সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি করা চিরাচরিত প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ বাংলাদেশ রেলওয়ে, রাষ্ট্রীয় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সকল সময়ে সাশ্রয়ী ভাড়ায় যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করে থাকে। যার ফলে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লোকসান দিয়ে আসছে। জাতির কাছে পরিচিত হয়েছে লোকসানের প্রতিষ্ঠানে। তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন রোড-ট্রান্সপোর্ট পরিবহন সংস্থা তাদের গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখে সারাদেশের মানুষকে জিস্মি করে ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করে না।
অসহনীয় লাগামহীন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক অবস্থার অবনতি, অর্ধাহারে-অনাহারে স্বল্প বেতনে রেলওয়ে কর্মচারীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে চলেছে। রেলওয়ে এলাকার পারিপার্শ্বিক অবস্থায় অবক্ষয় এর কারণে অস্বস্তিকর, নিরাপত্তাহীনতার মাঝে বসবাস করতে হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে নি¤œমানের চিকিৎসা, যথাযথভাবে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ না করার কারণে নানাবিধ রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়ছে। ছেলেমেয়েদের ভরণপোষণ, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা ব্যয় ৫০% বৃদ্ধির ফলে অর্থনৈতিক চরম বিপর্যয়ে নিপতিত হওয়ায় শ্রমিক-কমচারীর বেতন বৃদ্ধি অতীব জরুরী। কারণ যে হারে মূল্যমান হ্রাস পাচ্ছে তাতে রেলওয়ের লোকসানের সাথে রেল কর্মচারীদের কোন হাত নাই। সাশ্রয়ী মূল্যে যাত্রী-মালামাল পরিবহন হচ্ছে অথচ রেলওয়ে কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ৪৫% সাশ্রয়ী মূল্যে কোন সুযোগ-সুবিধা বর্তমানে প্রচলিত নাই। আকাশচুম্বি উর্ধ্বমূল্যের কারণে রেলওয়েকে ভাড়া বৃদ্ধি যেমন প্রয়োজন একই সাথে রেলওয়ে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিও তেমনই প্রয়োজন।
যুক্তিসঙ্গত কারণে ট্রেনের ভাড়া বর্তমান মূল্যর চেয়ে দ্বিগুণ করা উচিত এবং একই সময়ে রেলওয়ে কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদিও দ্বিগুন করা উচিত। তারপরও দেখা যাবে রোড ট্রান্সপোর্ট পরিবহন থেকে কমপক্ষ ২০% কম ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। সকল পরিবহনের ভাড়া মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা উচিত বলে মনে করি। নতুবা রেলওয়ের লোকসানের পরিমাণ বর্তমানে যা আছে তার থেকে আরও যোগ হবে প্রায় ৪৫% শতাংশ। এ অবস্থা থেকে রেলওয়েকে লোকসানের হাত থেকে রক্ষার্থে ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই উর্ধ্বগতির বাজারের সাথে সমন্বয় করে রেলওয়ে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করার দাবি জানাচ্ছি।