শেরপুর ঝিনাইগাতী নিজগৃহে পরবাসী হালিমা বেগম। থাকার ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পরেছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু ভাতিজা ও নাতিদের ষড়যন্ত্র ও প্রতিরোধের মুখে তা সংস্কার করতে পারছে না হালিমা বেগম। ফলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়া ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন হালিমা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
হালিমা বেগম উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ দাড়িয়ারপাড় গ্রামের জুনাব আলীর স্ত্রী।
জানা গেছে, জুনাব আলীর আদিবাড়ি পার্শ্ববর্তী শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল গ্রামে। সহায় সম্বল না থাকায় দাড়িয়ারপাড় গ্রামে হালিমা বেগমকে বিয়ে করে ঘর জামাই হিসেবে রয়েছেন। জুনাব আলীও হালিমা বেগমের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তারা দত্তক নিয়েছেন এক কন্যাকে। দুই মেয়েকেই বিবাহ দিয়েছেন। হালিমা বেগম পৈত্রিক ভিটার বাবা মায়ের ঘরেই বসবাস করেন।
হালিমা বেগম জানান, তার পৈত্রিক সম্পত্তিগুলো ভাগবাটোয়ারা না দিয়ে তার ভাতিজা ছামাদ, আওয়ালসহ অন্যান্যরা ভোগদখল করে করে আসছেন। হালিমার অভিযোগ তার ভাতিজারা মাঠের কিছু আবাদি জমি ক্রয় করার নাম করে কিছুদিন পূর্বে হালিমা বেগমকে সাব রেজিস্টার অফিসে নিয়ে দলিলে স্বাক্ষর নেন। এদিকে হালিমা বেগম তার পৈত্রিক ভিটার বাবা-মায়ের ঘর দুইটি সংস্কার করতে গেলে ভাতিজারা বাধা প্রদান করে। এতে ঘর সংস্কার করতে না পেরে ভাঙ্গা ঘরে মানবের জীবন যাপন করে আসছেন হালিমা বেগম। হালিমা বেগমের অভিযোগ তাকে তার বাবা মায়ের ভিটা থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করে আসছেন তার ভাতিজারা। আবাদি জমি ক্রয় করার কথা বলে প্রতারণা করে বাড়ির জমি লিখে নিয়েছেন হালিমা বেগমের কাছ থেকে। বর্তমানে হালিমা বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়াতে তার ভাতিজারা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। নানা অজুহাতে হালিমা বেগমের সাথে গায়ে পড়ে ঝগড়া বাধানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে তার ভাতিজারা।
এসব বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে প্রশাসন ও সমাজ পতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বেশ কিছুদিন ধরে। কিন্তু তার ভাতিজারা প্রভাবশালী হওয়ায় কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না হালিমা বেগম। ফলে হালিমা বেগম নিজগৃহে পরবাসীর মতো চরম দুর্ভোগের পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পরিবারটি।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে প্রত্যক্ষ করা গেছে হালিমা বেগমের ঘর দইটি বসবাসের অনুপযোগী। এসময় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন হালিমা বেগমের ভাতিজা ছামাদ ও আওয়ালসহ অন্যান্যরা। সাংবাদিকগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সাথে সাথেই হালিমা বেগমও তার স্বামী জুনাব আলীর উপর হামলা করার চেষ্টা করে তার ভাতিজা ও নাতি নাতনীরা।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে হালিমা বেগমের স্বামী জুনাব আলী বাদি হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এব্যাপারে ছামাদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের ছেলে মেয়ের সংখ্যা বেশি। বাড়িতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ফুফুর বাড়ির জমির অংশ আমরা ক্রয় করে নিয়েছি। বাড়িতে ফুফুর কোন জমি নেই। এ কারণে ফুফুকে বাড়িতে থাকতে দেয়া হবে না। আবাদি জমিগুলোর অংশ ফুফু পাবে তা বুঝিয়ে দেয়া হবে।
জনাব আলী দেওয়া অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আল আমিন বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।