এই সময় স্কুলের অন্যান্য ছাত্রদের সাথে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিলে যাওয়া-আসা করতেন। মূলত এর মধ্য দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয়েছিল। পরে সেখান মেট্রিকুলেশন পাশ করে তিনি ভর্তি হন চৌমুহনী কলেজে। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেন। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ তিনি পল্টন ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানকে “জাতির জনক” উপাধি প্রদান করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক। ছাত্রলীগ নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, আব্দুল কুদ্দুস মাখন, আ. স. ম. আবদুর রব ও শাজাহান সিরাজের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উদ্বোধন করেন আ স ম আবদুর রব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেন আ স ম আবদুর রব এবং শেখ মুজিবুর রহমান কে ”বঙ্গবন্ধু” ও “জাতির জনক” নামে ভূষিত করেন। তিনি ১৯৭০-১৯৭১ মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসুর) ভিপি ছিলেন। তিনি ১৭ মার্চ ১৯৭৪ তারিখে রমনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে জাতীয় রক্ষী বাহিনীর নেতৃত্বে জনতার উপর গুলি চালানোর মধ্যে সমাবেশের নেতৃত্ব দেন। রব ১৯৭৪ সালের রমনা হত্যাকাণ্ডের একজন জীবিত ব্যক্তি।
৩ নভেম্বর ১৯৭৫-এ বাংলাদেশে অভ্যুত্থানে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জড়িত থাকার অভিযোগ থেকে রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, এম. এ. জলিল ও রবকে ক্ষমতা গ্রহণের পর মুক্তি দেন। আ.স.ম. আব্দুর রব ও শাজাহান সিরাজের উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল গঠিত হয়। ২৩ ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে দলের প্রথম জাতীয় সম্মেলনে মেজর জলিল সভাপতি, আ.স.ম. আব্দুর রব সাধারণ সম্পাদক এবং শাজাহান সিরাজ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি হাসানুল হক ইনু নির্বাচিত হন। জাসদের জন্ম হয়েছিল সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে ও বিপ্লবী পথে। আ স ম আব্দুর রব ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী হিসেবে লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তিনি ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। চতুর্থ জাতীয় সংসদের তিনি বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। তিনি ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী হিসেবে লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাসদ আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেয়। ফলশ্রুতিতে তিনি শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি ২৯ জুন ১৯৯৬ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও ২৪ ডিসেম্বর ১৯৯৮ থেকে ১৫ জুলাই ২০০১ সাল পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯১ সালের পঞ্চম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী হিসেবে তিনি লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে পরাজিত হন। আ স ম আব্দুর রব একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা। আ স ম আব্দুর রবের স্ত্রী তানিয়া রব। এই দম্পতীর তিন ছেলে। বড় ছেলে স্ত্রীসহ যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহরে থাকেন। মেঝ ছেলে থাকেন নিউইয়র্কে আর ছোট ছেলে থাকেন থাইল্যান্ডের ব্যাংককে।
আজ বিকেলে তার বাসভবনে হৃদয়ে পতাকা ২ মার্চ এর প্রধান উপদেষ্টা এস এম সামছুল আলম নিক্সন, সভাপতি সাহানা সুলতানা ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র নেতৃত্বে ফুলেল শুভেচ্ছা ও কেক কেটে অভিনন্দন জানানো হয়।
আজ বিকেলে তার বাসভবনে হৃদয়ে পতাকা ২ মার্চ এর প্রধান উপদেষ্টা এস এম সামছুল আলম নিক্সন, সভাপতি সাহানা সুলতানা ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র নেতৃত্বে ফুলেল শুভেচ্ছা ও কেক কেটে অভিনন্দন জানানো হয়।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জাসদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস তানিয়া রব, সংগঠনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট গবেষক ও লেখক ড. শহিদুল্লা আনসারী, সহ-সভাপতি রোমান চৌধুরী, সহ-সম্পাদক আকিবুর রহমান লিটন, এস এম মোমো, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন। নেতৃবৃন্দ তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।