নিজস্ব প্রতিবেদক:
২৮ নভেম্বর ২০২০, শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক, দুর্নীতি, ধর্ষণ ও সাম্প্রদায়িক অপযজ্ঞ রুখে দিবে বাংলাদেশ প্রত্যয়ে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, সম্মেলন প্রস্তুতি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ও মুখপাত্র ক্বারী মাওলানা আসাদুজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক হাফেজ মাওলনাা আনোয়ার হোসেন জুয়েল, যুগ্ম আহ্বায়ক মুফতী আলিম বিজয় নগরী, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মাওলানা আবু মুসা ভূইয়া, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, মাওলানা আব্দুর রহিম, মুফতী ইলিয়াস হোসেন ও সুফী আব্দুল করিম প্রমুখ।
মানববন্ধনে মুফতী মাসুম বিল্লা নাফিয়ী বলেন, জঙ্গীবাদী সাম্প্রদায়িক কোন অপশক্তির জায়গা হবে না বাংলাদেশে। আমরা লক্ষ্য করছি যে, স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র ইসলামের নাম ব্যবহার করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে ধর্মীয় উস্কানীর অপচেষ্টা করছে। ভাস্কর্য একটি জাতির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যতা বহন করে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার বিরুদ্ধে তারা যে অবস্থান নিয়েছিল তা আবার পুনরায় তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলো। ৭১ সালে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকলেই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে যেমনিভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, ঠিক তেমনিভাবে এখনো এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিবে ইনশাআল্লাহ। তিনি আরো বলেন, জামায়াত-শিবির ও হেফাজত ইসলাম এক ও অভিন্ন হয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ইস্যুতে মাঠে নেমেছে। এটি তাদের পূর্ব স্বভাব। তাদের পূর্ব পুরুষেরাও আমার স্বাধীনতা চায়নি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তারা পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গঠন করেছিল আল বদর, আল সামস, আল রাজাকার ও শান্তি বাহিনীসহ বিভিন্ন সংগঠন। মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য চালিয়েছিল নানাহ অপপ্রচারও বিশ্বব্যাপী। জাতির পিতার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে সকল প্রতিকুলতাকে মোকাবেলা করে লাল-সবুজের বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং সাম্প্রদায়িক অপতৎপরতা চালিয়ে ইসলাম ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে কোন অপশক্তি বাঙালি জাতিকে আর বিভ্রান্ত করতে পারবে না। বাংলাদেশ আজ সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতার কন্যা মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উন্নয়নের মহাসড়কে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। নি¤œ আয়ের দেশ থেকে উন্নতশীল রাষ্ট্রের দিকে অগ্রসরমান। অতএব, এ মৌলবাদী চক্রের অপপ্রচার ও মিথ্যাচারে বাঙালি জাতি বিভ্রান্ত হবে না। তারা বার বার বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সুড়সুড়ি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে দার করাবার চেষ্টা করছিল; তা ব্যর্থ হয়েছে। এখন আবার বিভিন্ন ইস্যুতে ধর্মকে ব্যবহার করে নতুন আঙ্গিকে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠ গরম করার অপচেষ্টা করছে। বাংলাদেশের সচেতন জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ ঐক্যবদ্ধ। এই সকল অপতৎপরতা রুখে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ নির্মাণের যে স্বপ্ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে যাচ্ছেন দেশের জনগণ তা বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ শান্তিতে বসবাস করছে। বাংলাদেশের চলমান ধর্মীয় সম্প্রীতি আজ বিশ্বের জন্য রোল মডেল। এই শান্তি ও সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করার জন্য বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে ইস্যু করে ৭১’র ঘাতকদের প্রজন্মরা বিভিন্ন ব্যানারে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তাদের এ স্বার্থন্বষী অপতৎপরতা কোনদিনই পূরণ হবে না। আমরা তাদেরকে হুশিয়ার করে বলতে চাই। একদিকে সরকার থেকে সুবিধা নিবেন, অন্যদিকে সরকার বিরোধী চক্রের সাথে হাত হাত করে দেশকে জঙ্গীরাষ্ট্র বানাবার যে মিশন চালাবেন তা হয় না। আপনাদের এই সকল মিথ্যা বুলিতে দেশের মানুষ আর কান দিবে না। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।