নিজস্ব প্রতিবেদক♦♦
আজ ১২ আগস্ট রোজ সোমবার বিকাল ৪ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বৈষম্য বিরোধী গণ আন্দোলন এর ডাকেমানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্য বিরোধী গণ আন্দোলন কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটা গণ রাজনৈতিক ধারার একটা প্ল্যাটফর্ম। এই প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে আজকে জাতীয় প্রেসক্লাবে আমরা সমবেত হয়েছি। আপনারা জানেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জুলাই মাসে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য যে আন্দোলন শুরু করেছিল। সেই আন্দোলনের দিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খুনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালায়। তাদের ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং পেটুয়া বাহিনীর মাধ্যমে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা যখন রাজপথে ছিল, তখন তাদের সাথে সহমত পোষণ করে, এদেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে সাধারণ তৃণমূল পর্যায়ে মানুষ পর্যন্ত এই আন্দোলনের সাথে যোগ দিয়েছিল। ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠেছিল গণআন্দোলনে। আর এই গণ আন্দোলন যখন গণঅভ্যুত্থানে রূপান্তর হয়েছে সে গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে সেই ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পিছনের দরজা দিয়ে পলায়ন করে।
গণ আন্দোলনের মাধ্যমে যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় এই সরকার একটি বিপ্লবী সরকার। এই বিপ্লবী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস আজকে খুনি হাসিনার নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান শাহাবুদ্দিন চুপ্পু এর প্রধান উপদেষ্টা । একটি গণঅভ্যুত্থানের গঠিত বিপ্লবী সরকার ফ্যাসিস্ট হাসিনার অধীনে থাকতে পারে না। খুনি হাসিনার নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান শাহাবুদ্দিন চপ্পু বঙ্গভবনে বসে বসে প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র করছে।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার বানানো প্রেসিডেন্ট যতক্ষণ পর্যন্ত বঙ্গভবনে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত বুকের রক্ত দিয়ে অর্জন করা ২৪ সালের সেই স্বাধীনতা লুট হওয়ার সম্ভাবনা অভিসম্ভাবি। সুতরাং অবিলম্বে হাসিনার বানানো শাহাবুদ্দিন চুপ্পকে অপসারণ করে, সেই জায়গায় অন্তর্বর্তীকালীন বিপ্লবী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেখতে চাই। পাশাপাশি বিগত ১৫ বছরে এই দেশে মামলা, হামলা, গুম, খুনের মাধ্যমে যেই ফ্যাসিস্ট রাজনীতি চর্চা হয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের রন্ধে রন্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং খুনি হাসিনার প্রেতাত্মারা অবস্থান করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই রাষ্ট্রের সংস্কার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদেরকে রাজপথে থেকে পাহারা দিতে হবে। তারপর জনগণের অভিপ্রায়ের মাধ্যমে একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করতে হবে। এই গঠনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে কৃষক শ্রমিক মেহনতী সহ সকল পেশার মানুষের মতামত নিতে হবে । সেই মতামতের প্রেক্ষিতে একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করতে হবে, যে গঠনতন্ত্র সাধারণ মানুষের জন্য একটি বাসযোগ্য রাষ্ট্র কায়েম করবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই গঠনতন্ত্র প্রণয়ন না হবে, ততদিন পর্যন্ত এই সরকারকে সময় দিতে হবে। তারপরে আমরা দাবি জানাচ্ছি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন দলিলের ভিত্তিতে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের এই দাবিগুলি যদি অনতিবিলম্বে পালন করা না হয়, তাহলে আবার সেই জনতাকে সাথে নিয়ে আমরা রাজপথে তীব্র আন্দোলন শুরু করব।
এত রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পর কেন আবার পুরাতন সংবিধানে ফিরে যাওয়া? আমরা চাই বাংলাদেশের নতুন ‘গঠনতন্ত্র’। বাংলাদেশের সবাই মিলে যে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করবে সেটাই হবে রাষ্ট্র পরিচালনার নতুন প্রেসক্রিপশন। তাই ফ্যাসিস্ট শক্তির হাতিয়ার ফ্যাসিস্ট সংবিধানের ফ্যাসিস্ট প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে নয়, আমরা ড.মুহাম্মদ ইউনুসকে চাই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে। অন্তর্বর্তীকালীন বিপ্লবী সরকারের প্রেসিডেন্ট ড.মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে নতুন কনস্টিটিউশন রচিত হোক। অবিলম্বে ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে বিপ্লবী সরকারের রাস্ট্রপতি ঘোষনা করা, জনগনের অভিপ্রায়ের সাথে সম্পৃক্ত রেখে নতুন গঠনতন্ত্র প্রনয়ন করা, এবং আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করার দাবি করেন। অন্যথায় আমাদের স্বাধীনতা আবার লুট হয়ে যাবে । এবং আমরা আবার পরাধীনতার শিকলে বাধাঁ পড়বো।
উক্ত মানববন্ধনে অবিলম্বে ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে বিপ্লবী সরকারের রাস্ট্রপতি ঘোষনা করা, জনগনের অভিপ্রোয়ের সাথে সম্পৃক্ত রেখে নতুন গঠনতন্ত্র প্রনয়ন করা, এবং আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করার দাবি করা হয়। উপস্থিত জনতা তাদের বক্তব্যে বলেন অবিলম্বে দাবী না মানলে ছাত্র-জনতা আবার রাজপথে কঠোর আন্দোলনে নামবে।