নিজস্ব প্রতিবেদক:
জানতে চাইলে ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া রবিবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, পারিবারিক বিরোধ ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওই ছাত্রকে (রাব্বি) অপহরণের পর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সন্দেহভাজন পাঁচজন অপহরণকারীর নাম উল্লেখ করে এ ঘটনায় রাব্বির বাবা মো. আলী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত চলছে।
এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, অপহরণকারীদের সঙ্গে রাব্বির পরিবারের জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ থাকতে পারে। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলছে। দুই পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে।
এদিকে রবিবার রাব্বিকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসেছিলেন বিচারের দাবিতে। এ সময় একটি চেয়ারে বসে থাকা অচেতন রাব্বির হাতে, কাঁধের নিচে, বুকে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ক্ষতে ছিল সেলাই। সেখানে থাকা পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, অপহরণের পর প্রায় এক মাস অজ্ঞাত জায়গায় আটকে রেখে অপহরণকারীরা রাব্বির ওপর নির্যাতন চালিয়েছে।
সেখানে উপস্থিত রাব্বির বাবা মো. আলী দাবি করেন, ছেলে (রাব্বি) মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে গত ২০ মার্চ রাতে বাসার বাইরে বেরিয়েছিল। এরপর থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রাব্বি নিখোঁজ ছিল। কোথাও তাঁকে খুঁজে না পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যার পর রামপুরা থানার এক উপপরিদর্শক তাঁকে ফোন করে জানান, রাব্বিকে একজন রিকশাচালক উদ্ধার করে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রামপুরার একটা ক্লিনিকে ভর্তি করেছে।
এরপর তিনি দ্রুত ওই ক্লিনিকে যাওয়ার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে ছেলেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর ক্ষততে সেলাইয়ের পর ছেলেকে নিয়ে তাঁরা তাঁদের ধানমন্ডির বাসায় চলে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর পুলিশের পরামর্শে রাব্বিকে আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে একজন বিচারিক হাকিমের কাছে রাব্বি তাঁর বক্তব্য দিয়েছেন।
পুলিশ বলছে, অপহরণের শিকার পরিবার ও অপহরণকারী হিসেবে যাদের কথা বলা হয়েছে, দুই পক্ষের বাড়িই সিরাজগঞ্জ। রাব্বির বাবা মো. আলী পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
অপহরণকারীরা রাব্বিকে একটি ঘরে আটকে রেখে নির্যতন চালিয়েছে দাবি করে মো. আলী বলেন, অপহরণকারীরা অনেকবার রাব্বির শরীরে ইনজেকশন দিয়েছে। একপর্যায়ে তারা তাঁর চুল কেটে দেয় ও শরীরের নানা জায়গায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে পোঁচ দিয়ে ক্ষতে লবণ ছিটিয়ে দেয়। অপহরণকারীদের একজন গলার কাছে ছুরি ধরে তাঁকে খুনের পরিকল্পনাও করছিল। তবে সেখানে উপস্থিতি একজন বলেছিল রাব্বিকে রাখলেই তাদের লাভ।
অপহরণকারীরা রাব্বির মাকেও এক সময় হত্যার চেষ্টা করেছিল। তাছাড়া অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে তাঁর মা আগেই যেসব মামলা করেছিল, সেগুলো তুলে না নিলে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল তারা। এছাড়া অপহরণকারীরা পরিবারের অন্য সদস্যদেরকেও হত্যার পরিকল্পনা করেছিল।