পটুয়াখালীর বাউফলে সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাত করার দায়ে বরখাস্তকৃত ইউপি সদস্য মোসা. লিপি বেগমের ঘরে ডেকে নিয়ে তার নেতৃত্বে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েক নেতা একই ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যেকে কান ধরে উঠবস করানোসহ শারিরিক লাঞ্ছিত করা এবং অপর এক ইউপি সদস্যকে খুঁজে না পেয়ে ওই সদস্যের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নে সরকারি চাল আত্মসাত করার দায়ে বরখাস্তকৃত ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন মহিলা লীগের সভাপতি লিপি বেগমের ঘরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেশবপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফোরকান আকন বলেন, শুক্রবার (৮ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিয়ানুর হাওলাদার রনি, ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক সিকদার, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য সুজনসহ ৪/৫ জন ৭নং ইউপি সদস্য ফোরকান আকনের বাড়িতে গিয়ে বলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেশবপুর কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ পিকু ত্রাণের বিষয়ে আপনার সাথে কথা বলবেন এবং এখনই ইউনিয়ন পরিষদে যেতে বলেন। তখন তাদের সাথে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তারা তাকে ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বহিস্কৃত মহিলা ইউপি সদস্য লিপি বেগমের ঘরে নিয়ে যান।
ওই সময় সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বশার খান, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সহ আরো কয়েজন ছিলেন। সেখানে ওই ইউপি সদস্য ফোরকান আকনকে ৭নং ওয়ার্ডের সরকারি ত্রাণের তালিকায় অর্ধেক নাম তাদের দিতে হবে বলে জানান। তখন ওই ইউপি সদস্য তাদেরকে বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করে তালিকা প্রস্তুত করেছি। এ কথা বলার সাথে সাথেই তালিকা ঠিক হয়নি বলেই তারা ওই ইউপি সদস্যকে অকথ্য ভাষায় গালামন্দ করতে থাকেন।
একপর্যায়ে যুবলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং কান ধরে উঠবস করান। এরপরে ওই নেতারা জোর করে তালিকা ছিনিয়ে নিয়ে সেই বহিস্কৃত ইউপি সদস্য লিপি বেগমের ঘর থেকে বের করে দেয়।
অপরদিকে একই ঘটনায় ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম হাওলাদারেরে খোঁজে যুবলীগ সভাপতি জহিরের নেতৃত্বে ১০/১১ টি মোটরসাইকেলে তার বাড়িতে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তার স্ত্রী সন্তানের সামনে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং তাদের কথানুযায়ী সরকারি ত্রাণের তালিকা না করলে খবর আছে বলে হুমকি দিয়ে যায়।
এ বিষয়ে লিপি বেগম বলেন, আমি পেছনে ছিলাম। কথা কাটাকাটির শব্দ শুনেছি। এর বেশি কিছু জানি না।
যুবলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। তবে সরকারি ত্রাণের তালিকায় আমাদের সুপারিশ বিবেচনা করার কথা বলেছি।
ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিয়ানুর হাওলাদার রনি বলেন, কথা কাটকাটি ও ঠেলাঠেলি হয়েছে। তবে কান ধরে উঠবসের ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খান লাভলু বলেন, দুই ইউপি সদস্যের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে সেটা আমাকে ওই সদস্যরা জানিয়েছেন। ইউপি সদস্যকে লাঞ্ছিত ও কানধরে উঠবসের ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক। এ বিষয়টি দলীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়েছে।