পাবনা প্রতিনিধি◊◊
অন্যের দর্জির দোকানে দর্জি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন আবুল কাশেম। স্বপ্ন ছিল নিজে একটা দর্জির দোকান দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। এজন্য কিছুদিন আগে জমি বন্ধক রেখে দেড় লাখ টাকাও সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু আগুনে পুড়ে গেল কাশেমের সব স্বপ্ন।
গত শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে তার টিনের বসতঘর পুড়ে যায়। আবুল কাশেম পাবনার চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের সমাজ করৎকান্দি গ্রামের ইউসুফ প্রামানিকের ছেলে। বর্তমানে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে অন্যের বাড়িতে বাস করছেন তিনি।
আবুল কাশেম জানান, প্রচন্ড শীতে গরুকে রক্ষায় গোয়াল ঘরে তিনটি বড় বাল্ব জালানো হয়। কিন্তু বৈদ্যুতিক তার একটু নরমাল হওয়াল লোড টানতে পারেনি। এক পর্যায়ে ঘরের মেইনসুইচ ও বোর্ডে আগুন ধরে যায়। এ সময় ঘরে কেউ ছিল না। পরে তার বাবা ইউসুফ প্রামানিক টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসেন।
প্রথমে বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। তারপর এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। একদম প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় সেখানে দমকল বাহিনী যাবার সময় ছিল না। কিন্তু আগুন নেভানোর আগেই ঘরে থাকা সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে যায়।
আবুল কাশেমের স্ত্রী বিউটি খাতুন বলেন, আগুনে ঘরে থাকা নগদ দেড় লাখ টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার, একটি ফ্রিজ, ২০ মণ চাউল, দু’টি সেলাই মেশিন, টিভি, সব আসবাবপত্র, কাপড় চোপড়, খড়ের পালাসহ সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। কিছুই রক্ষা করা যায়নি। এতে তাদের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ আবুল কাশেম জানান, আগুনে তিনি নি:স্ব হয়ে গেছেন। অন্যের দোকানে দর্জির কাজ করতেন, স্বপ্ন ছিল নিজেই একটা দর্জির দোকান দেয়ার। এজন্য জমি বন্ধক রেখে টাকাও জমিয়েছিলেন। কিন্তু সব হারিয়ে এখন তিনি দু’চোখে অন্ধকার দেখছেন। স্বপ্ন পূরণ তো দূরের কথা। এই ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবেন সেটি তিনি ভেবে কুল পাচ্ছেন না।
এদিকে, আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন
নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তি। তিনি বলেন, আবুল কাশেম একজন পরিশ্রমী মানুষ। কাশেম অন্যের দোকানে দর্জির কাজ কর সংসার চালাতেন। আগুনে পুড়ে তার অনেক ক্ষতি হয়েছে। সব সময় অসহায় মানুষের পাশে থাকেন। তাঁরই ধারাবাহিকতায় এ পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
চাটমোহর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, আগুন লাগার ঘটনাটি আমি জেনেছি। উপজেলা পরিষদ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে বলে জানান তিনি।