আজ (৩০ মার্চ) বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ রেলওয়ে টিএলআর ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাওনে নেতৃত্বধীন একটি প্রতিনিধি দল রেল ভবনে মাননীয় রেলপথ মন্ত্রীর দপ্তরে এ আবেদনপত্র দাখিল করেন। এ আবেদনপত্রের অনুলিপি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সচিব—রেলপথ মন্ত্রণালয়, মহাপরিচালক—বাংলাদেশ রেলওয়ে, জেনারেল ম্যানেজার—পূর্বাঞ্চল (চট্টগ্রাম) ও পশ্চিমাঞ্চল (রাজশাহী) এবং বিভাগীয় ম্যানেজার (ঢাকা, চট্টগ্রাম, পাকশী, লালমনিরহাট) বরাবরেও প্রেরণ করা হয়।
আবেদন পত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিএলআর ঐক্য ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থান রক্ষায় আউটসোর্সিং বাতিল এর সুযোগ রয়েছে এবং টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিক হিসাবে কর্মরতদের চাকরি স্থায়ীকরণ সম্ভব। ২২ নভেম্বর/২০২০ তারিখে রেলওয়ে নিয়োগ বিধিমালা— ২০২০ অনুমোদন হওয়ার পর গত ২৭ ডিসেম্বর/২১ তারিখে রেলওয়ে নিয়োগ বিধি সংশোধন এর জন্য রেলওয়ে মহাপরিচালক মহোদয়কে আহবায়ক করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি বিশেষায়িত কারিগরি প্রতিষ্ঠান। এটি সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মত নয়। ইচ্ছা করলেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগ করে রেলওয়েকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা সম্ভব নয়। টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করারও সুযোগ রয়েছে।
রেলওয়েতে অনেকেই দীর্ঘ ৮—১০ বছর ধরে টিএলআর হিসেবে চাকরি করে আসছেন। টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকরা দীর্ঘদিন থেকে চাকরি করে আসলেও তাদের স্থায়ীকরণ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় চাকরিচ্যুত হলে তারা অন্যকোন চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন না। অথচ ০৩/০৫/২০০৩খ্রি. তারিখে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সরকারি আদেশ মপবি/কঃবিঃশাঃ/কপগ—১১/২০০১—১১১ এর ৫নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “বর্তমানে রাজস্বখাতে অস্থায়ীভাবে সৃষ্ট পদ ৫ (পাঁচ) বছর এবং উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত পদ ৩ (তিন) বছর পর স্থায়ী করার যে বিধান রয়েছে তা রহিত করে রাজস্ব খাতে অস্থায়ীভাবে সৃষ্ট এবং উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত উভয় ধরনের ৩ (তিন) বছর পর স্থায়ী করা যাবে।”
গত প্রায় ২০ বছর যাবত রেলওয়েতে অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হাজার হাজার শ্রমিক এ আদেশের উপর ভিত্তি করে মহামান্য আদালতের আদেশের মাধ্যমে তাদের নিজেদের চাকরি স্থায়ীকরণ সম্পন্ন করেছেন। যে আদেশ দ্বারা আদালতের রায়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণ করছে, সেই সরকারি আদেশের পূর্ণ বাস্তবায়ন করলে শ্রমিকদের আর আন্দোলন—সংগ্রাম বা আদালতের আশ্রয় নেয়ার প্রয়োজন হয় না। অথচ আমরা দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসলেও আমাদের দাবি পূরণ করা হচ্ছে না। টিএলআর বাতিল করে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। এ অবস্থায় বেকারত্বের আশঙ্কা মাথায় নিয়ে চরম মানসিক অশান্তিতে টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিকদের দিনযাপন করতে হচ্ছে।
নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ এর মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিকদের চাকরি থেকে বাদ দিয়ে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগে চক্রান্ত। রেলওয়ের টিএলআর/অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত শ্রমিকদের বাদ দিয়ে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগ করা হলে রেলওয়ের সুষ্ঠু পরিচালনা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় হবে। তারপরেও সরকারের অর্থ বিভাগ, টিএলআর দের বাদ দিয়ে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগের জন্য রেলওয়েকে চাপপ্রয়োগ করছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিএলআর ঐক্য ফোরামের পক্ষ থেকে কর্মরত টিএলআর /অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থান রক্ষায় আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগ বাতিল করে অস্থায়ী শ্রমিকদের অনিশ্চিত জীবন থেকে মুক্তি এবং চাকরি স্থায়ী করণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে রেলপথ মন্ত্রীকে আবেদন জানানো হয়।