সংবাদ সম্মেলনে চাকরিপ্রত্যাশী যুব প্রজন্ম’র নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত যুব সমাজ বিগত এক যুগ ধরে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উর্নীতকরণের গঠনমূলক ও যৌক্তিক দাবি জানিয়ে আসছে। কোভিড-১৯ এর আঘাতে সকল বয়সী শিক্ষার্থীরা ২ বছরের অধিক সময় হারানোর পর বর্তমান যুব প্রজন্ম সাংবিধানিক অধিকার সুযোগের সমতা বঞ্চিত হয়ে আবারও চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীতকরণের দাবি জানিয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট। এই প্রতিক্রিয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকটখোলা চিঠি প্রদান করা হয়েছে; তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জনাব গাজি লিকুর মাধ্যমে ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের সম্মানিত চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে এবং টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জে গিয়ে জনাব শেখ সেলিমসহ শেখ পরিবারের সদস্যবৃন্দের সাথে স্বশরীরে আলােচনা করা হয়েছে। চাকরিপ্রত্যাশী যুব প্রজন্ম এখন অবধি এমন কোন প্রকার আন্দোলন সংগ্রাম তথা কর্মসূচীতে যায়নি যাতে রাষ্ট্র ও সরকারকে বিব্রত হতে হয় বা জনজীবনে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
তাঁরা বলেন, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তেেম্ভর প্রতিনিধিগণ ২০১৮ সালের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধির অঙ্গীকার উল্লেখ করা হয়। আওয়ারমী লীগ সরকারের প্রায় ও বছর পেরিয়ে আর একটি নির্বাচন আসন্ন এমন সময়েও উক্ত ওয়াদা বাস্তবায়ন করেনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শের রাজনীতি করা এই দলটি। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত সংবাদে দলীয় সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন কয়েক মাসের মধ্যেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করা হবে। পরে মিডিয়াতে একই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী। করোনা ২ বছরের অধিক সময় কেড়ে নেওয়ার পর বয়সসীমা হারিয়ে ফেলা চাকরীপ্রত্যাশী উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৫ লক্ষাধিক। নিত্তনৈমিত্তিক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে সারা বাংলাদেশ জুড়ে। জাতীয় সংসদে এখন অবধি ৭১ বার (মহামান্য রাষ্ট্রপতি, তৎকালীন স্পীকার জনাব আব্দুল হামিদসহ) বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবিটি উথাপিত হয়েছে যার সাম্প্রতিক উদাহরণ জাতীয় পার্টির সাংসদ জনাব শামীম হায়দার পাটোয়ারীর বক্তব্য। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়য়সীমা ২৭ থেকে ৩০ বছরে উন্নীত হয় এখন থেকে ৩১ বছর আগে ১৯৯১ সালে, সেটাও অন্য সরকোরের আমলে। তখন গড় আয়ু ছিলো ৫৭ বছর আর এখন ৭৩। বিশ্বের ১৬২টি দেশে আমাদের চেয়ে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা অধিক। বাংলাদেশের জাতীয় যুবনীতিতে যুবকের সংজ্ঞায় ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়স বলা হচ্ছে আবার এখানে ৩০ বছরে আটকে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ। অথচ জনপ্রশাসন সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি লিখিতভাবে বয়সসীমা ৩৫ অনুমোদন করার জন্য সুপারিশ করেছেন। শুধুমাত্র বিসিএস কোয়ালিফাই করার বয়সের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বয়সসীমার ৩১ বছরের অচলায়তন চলমান। আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চেয়ে নূন্যতম তিনটি বিসিএস পরীক্ষায় কম আবেদন করতে পারেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আজকের এই কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দুপুর ৩ ঘটিকায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে জনসমাবেশের আয়াজন করা হয়েছে। যেখানে ঢাবি, রাবি, জবি, জাবি, চবি, ইবি, বাকৃবি এবং সাত কলেজ, ঢাকা কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কলেজের প্রায় কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সত্যি বলতে এদেশের যুবসমাজকে দেওয়া ওয়াদার বিষয়টি বাস্তবায়নে সরকারের উপলব্ধি এখনই হবে যদি আপনারা তথা বাংলাদেশের গণমাধ্যম মানবিক দায়িত্ববাধ থেকে আজকের জনসমাবেশে উপস্থিত হয়ে গণদাবির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে মূলধারার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে উপস্থাপন করেন এবং সোচ্চার হন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ জুড়ে বিষয়টি গণদাবি হিসেবে উচ্চারিত হচ্ছে। সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর অসংখ্য প্রতিনিধি ৩৫ এর স্বপক্ষে তাঁদের মতামত তুলে ধরেছেন। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আপনারা এই কঠিন সময়ে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন এটাই প্রত্যাশা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চাকরি প্রত্যাশী যুব প্রজন্মের প্রধান সমন্বয়ক মোঃ তানভীর হোসেন, সদস্য সানিয়া সুমি, আসিফ হাসান, সাজিদ সেতু, রবিউল বনি, রাজ্জাক হাবিব, জহিরুল জনি, আনোয়ার জনি, কামরুল হাসান, কিশোর সাহা, মর্তুজা হাসান, মাহফুজ সনেট, পিন্টু সরকার, সঞ্জয় সরকার, আব্দুল গাফফার, আহসানুল বাবু, ফারহা জুবায়ের, শাওন সোমা, রেজোয়ানা সুলতানা, মইনুল হোসেন, সোহেল শেখ, শ্রীসান প্রমুখ।