সারজিদ আলম, আবু বাকের মজুমদার ,মোঃ মাহিন সহ অনেক সমন্বয়কগণ চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ এর বিপক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন এবং বলেছেন এটা অযৌক্তিক ।
আমরা এমন অযৌক্তিক মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি ।
এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে পুরা একটি ছাত্র যুব সমাজকে আপনারা দ্ধিখন্ডিত করছেন ভাই । এতে করে আপনাদের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ।
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ সহ উন্মুক্ত করণের যুক্তিকতা…
★ প্রথমত এইখানে কেউ চাকরি চায়নি । চেয়েছে কেবল যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ কিংবা সার্টিফিকেটের মূল্যায়ণ । কারন ৩০ এর পর সার্টিফিকেট ডেড হয়ে যায় । এটা কিভাবে একটি মেধাবী সমাজ সমর্থন করতে পারে ?
★ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫/৪৫/৫৫/৫৯ কিংবা কোথায় আবার উন্মুক্ত । আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ফলো না করলে আমরা কিভাবে আন্তর্জাতিক মানের দেশ হব ভাই ?
★ বাংলাদেশে গড় আয়ু বৃদ্ধির সাথে সাথে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি পেয়েছে । যখন গড় আয়ু ছিল ৫৭ তখন আবেদনের বয়সসীমা করা হয়েছিল ২৭ আর যখন ৬০ হয়েছে তখন আবেদনের বয়সসীমা করা হয়েছিল ৩০ । এখন গড় আয়ু ৭০+ তাই এখন আবেদনের বয়সসীমা করা উচিত ৪০ কিন্তু আমরা নূন্যতম ৩৫ চেয়েছে । তাহলে এটা কি যৌক্তিক নয় কি ভাই ?
★ সেশনজট, করোনা, সহ ছাত্র সমাজ তাঁদের জীবন থেকে ৫,৭,১০ বছর হারিয়ে ফেলেছে । এটাতে রাষ্ট্র দায়ী । তাই এই সময়গুলো পুশিয়ে দিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা সম্পূর্ণ যৌক্তিক ।
★ এত বছরের অর্জিত সার্টিফিকেট কিভাবে মাত্র কয়েকটি বছর পরই এক্সপায়ার করে দেয় । এটা মেধা হত্যার শামিল নয় কি ভাই?
★ বারবার অবসরের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে কিন্তু আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি । তাহলে এই ক্ষেত্রেও আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা সম্পূর্ণ যৌক্তিক ।
★ এইখানে বেকারত্ব বাড়বেনা বলে আমি বিশ্বাস করি বরং সৃজনশীল মেধা আরো বেশি তৈরি হবে । কারন বয়স পার হওয়ার ভয়ে সবাই কেবল বই নিয়ে বসে থাকে । তাই সৃজনশীলতা তৈরি হয়না । তাই আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি পেলে যে যার মত করে সময় নিয়ে নিজেকে তৈরি করে নিবে ।
★ একটি ছেলে পিএইচডি করে এসে বেকার হয় কারন তার আবেদন করার মেয়াদই থাকেনা । যাহা রাষ্ট্র ধ্বংসের শামিল । যে রাষ্ট্র তাঁর উচ্চ শিক্ষাকে মেয়াদহীন করে দেয় তাহলে তাঁর উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে কি লাভ ভাই ?
★ ৩০ এ অনেকেরই প্রফেশনালভাবে ম্যাচুরিটি-ই আসেনা । যাহা হতে লাগে কমপক্ষে ৩৫-৪০ বছর । তাই আবদেনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে প্রফেশনে ম্যাচুরিটি লোক নিয়োগ দিলে রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর হবে । তখন প্রফেশনালি যে কোন কাজ আরো সুন্দর হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি ।
★ আপনারা কেবল ঢাবি ভিত্তিক চিন্তা করবেন কেন প্রিয় ভাই । আপনাদের আরো উদার ও নিঃস্বার্থপর হতে হবে ।
★ বাংলাদেশের প্রত্যেক কলেজ ইউনিভার্সিটি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি ৩৫ সহ শর্ত সাপেক্ষ্যে উন্মুক্ত পক্ষ্যে তাহলে আপনারা কেন এমন যৌক্তিক এবং সার্বজনীন বিষয়টির বিরোধিতা করছেন ভাই ।
★ আপনারা যৌক্তিকতা বুঝে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি বিষয়ে একমত হলেই কেবল রাষ্ট্রে এই বৃহৎ ছাত্র যুব সমাজ আপনাদের গ্রহন করবে ।আর নতুবা নয় ।
★ আপনারা ঢাবির এক কেন্দ্রীক চিন্তা থেকে বের হয়ে একটু ভিন্ন চিন্তা করা উচিত । কারন রাষ্ট্র কেবল ঢাবি চালায়না ভাই । রাষ্ট্র সকলের সমন্বয়ে পরিচালিত হয় ।
★ বয়স নয় মেধাই হোক আবেদনের মাপকাঠি । এটাই এখন সময়ের দাবি ।
কেবল কোটাই বৈষম্য নয় মেধাবীদের আবেদনের বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া বড় একটি বৈষম্য । যাহা জাতীকে ধ্বংস করার শামিল ।
আমরা চাই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা নূন্যতম ৩৫ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শর্ত সাপেক্ষ্যে উন্মুক্ত করে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি হোক । এই ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন ।
এবং আপনাদের পোস্টে ৩৫ বিরোধী এমন অযৌক্তিক মন্তব্য প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানাচ্ছি ।
বিঃ দ্রঃ – আমিও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন কেন্দ্রীয় সংগঠক হিসাবে কাজ করেছি যাহা আপনারা হয়তবা অবগত নয়। রাষ্ট্র নিয়ে আমরা সব সময় সার্বজনীন চিন্তা করি।
আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইল
শুভ কামনা ও যৌক্তিক বুদ্ধির আগমন হোক আপনাদের।