ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় সুমন মিয়া (২৮) নামের এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবককে মাছ চুরির অজুহাতে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ছয়ঘট্টি বেলওয়া গ্রামের লতিফ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় ফারাজ আলী নামের একজনকে গ্রেফতার করে ২৫ এপ্রিল সকালে দিনাজপুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হাসান কবির।
ঘটনার দিন শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার ভাতছালা গ্রামে এই নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবককে মারধরের ১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পরে সুমন মিয়াকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
রবিবার (২৪এপ্রিল) রাতে ৫ জনের নামে ঘোড়াঘাট থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার সুমনের পরিবার।
সেই ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার ভাতছালা গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে শাহারুল ইসলাম (৪৫) ও একই গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর (৩২) এবং তাঁতিপাড়া-বেলওয়া গ্রামের মৃত নুরল মিয়ার ছেলে ফারাজ আলী (৫৫), মাছ চুরির অজুহাতে সুমন নামের এক যুবককে একটি গাছের সাথে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে লাঠি ও হাত দিয়ে পর্যায়ক্রমে অমানবিক ভাবে নির্যাতন করছে। পরে আরও ২/৩ টি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যায়, যেখানে দেখা যায় একজন মহিলাও সুমন কে চর থাপ্পড় মারছে।
সুমনের মা জানান, আমরা খুবই গরিব। দিন এনে দিন খাই। আমার ছোট ছেলে সুমন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং ছোট বেলায় প্যারালাইসিস হওয়ায় বর্তমানে সে বাম পায়ে ঠিক ভাবে শক্তি পায় না। ঘটনার আগের দিন রাতে সে রাস্তার পাশে সরকারি ঘাড়িতে মাছ ধরার জাল নিয়ে জমিতে টাঙ্গিয়ে দিয়ে আসে। পরদিন শুক্রবার ভোরে সে জমিতে জাল থেকে মাছ আনতে গেলে সেই সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জমি থেকে তাদের মাছ ধরার খোলসানী থেকে মাছ চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার সন্তানকে গাছের সাথে বেঁধে অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করেন। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই “বাবা”!
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, গত ২৪ এপ্রিল নির্যাতনের শিকার সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা রুজু করলে আমরা তা তদন্তের ব্যবস্থা নেই এবং আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান পরিচালনা করে ফারাজ নামের একজনকে গ্রেফতার করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এ ছাড়াও এজাহার নামীয় আরও ৪ জন আসামিকে থানা পুলিশ গ্রেফতারের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।