সকালের কাগজ ডেস্ক◊◊
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশে সর্বস্তরের জনগণের বিক্ষোভ মিছিল এবং ব্যাপক আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন দেশব্যাপী।
গাজায় ফিলিস্তিনের ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ।
গাজায় চলমান গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধের দাবিতে কয়েকটি জায়গায় মানববন্ধন করে এবং কোথাও কোথাও মিছিল বের করা হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে ধর্মঘট এবং রাজধানীসহ অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন এবং সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসও বন্ধ রাখা হয়েছে।
স্বাধীন ফিলিস্তিন ও গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন।
বিশ্বব্যাপী চলমান ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে নিজ ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নর্থসাউথ ও ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরাও নিজ নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় বিক্ষোভ করছেন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, গাজার জনগণের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছি। কারণ সেখানে ফিলিস্তিনিদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে।
সায়েন্সল্যাব, বসিলা ও উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে বিক্ষোভ করেছেন বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাও। এবং জামায়াত ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সহ অনেক সংগঠন থেকে এতে সর্বস্তরের জনগণও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।
অনেককে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যেতে দেখা গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ (ঢামেক) বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেখানে বিক্ষোভ করছেন। বিভিন্ন সংগঠন আজ দিনভর সেখানে নানা কর্মসূচি পালন করবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ এমনকি শিশুরাও টিএসসির সামনে জড়ো হয়ে ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। তারা ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। অনেকের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা ছিল।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একজন বলেন, ‘বিশ্ব নেতারা ফিলিস্তিনের জনগণকে ভুলে যাওয়ায় আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চাই, যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরায়েলি নেতাদের বিচার চাই।’
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও ভাটারায় বিক্ষোভ করেছেন কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। সেই সময় তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
সহিংসতা বন্ধে বিশ্বব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস একযোগে বন্ধ করে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্টরা। তাদের ডাকে সাড়া দিয়েই বাংলাদেশে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় গতকাল সারাদেশে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানায়।
এদিকে বিক্ষোভ ঘিরে গুলশান ও বারিধারা এলাকায় কূটনৈতিক জোনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করা ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ হাজার ৬৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও এক লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজার প্রায় ৬৯ শতাংশ ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ও অপরাধের প্রতিবাদে আজকের এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।