আমিরুল ইসলাম কবিরঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার রামডাকুয়ায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক উদ্বোধনের আগেই ধ্বসে গেছে। মুষলধারে প্রায় দুই ঘন্টার বৃষ্টিতে সেতুর পূর্ব পাশে এ ধ্বস দেখা দিয়েছে। ফলে দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার অন্ততঃ বিশটি গ্রামের মানুষ।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়,২০১৯ সালে রামডাকুয়া সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে এলজিইডি। এ কাজের দায়িত্ব পায় ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পুরকৌশল প্রযুক্তি লিমিটেড। পিসি গার্ডার সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়কসহ ৯৬ মিটার লম্বা। সেতুর মূল অংশ ছাড়া পূর্ব পাশে ৫০ মিটার ও পশ্চিম পাশে ৫০ মিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪’শ ৪৪ টাকা। এ বছর এপ্রিলে নির্মাণ কাজ শেষ হয় এ সেতুর।
স্থানীয়রা জানান,সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা,হরিপুর, তারাপুর ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর ও চিলমারি উপজেলার প্রায় ২০ গ্রাামের লোকজন প্রতিদিন যাতায়াত করে তিস্তার এই শাখা নদী দিয়ে। সেতু না থাকায় কখনো নৌকা,কখনো বাঁশের সাঁকো আবার কখনো কাঠের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিলো এখানে একটি সেতু নির্মাণ করার। অবশেষ ২০১৯ সালে শুরু হয়ে গত এপ্রিলে শেষ হয় এর নির্মাণ কাজ। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হতেই সেতুর পূর্ব পাশের ৫০ মিটার অংশের সংযোগ সড়কে ধ্বস দেখা দিয়েছে।
রামডাকুয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আঃ সামাদ মিয়া বলেন,গত রোববার বিকালে মুষলধারে বৃষ্টি হয় ঘন্টা দুয়েক। এতেই ব্রীজের সংযোগ সড়কটিতে ধ্বস দেখা দেয়। বর্ষা এখনও শুরু হয়নি। তাতেই ব্রীজের যে অবস্থা। মনে হচ্ছে ভোগান্তি পিছু ছাড়ছে না আমাদের চরবাসীর।
বেলকা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মজি বলেন,শুরু থেকেই সংশ্লিষ্টরা অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন সেতু নির্মাণে। আমরা এ বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগও করেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। মনগড়া কাজ করেছেন ঠিকাদার ও এলজিইডি অফিসের লোকজন। সে কারণে আজ সেতুর এই অবস্থা।
৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লাভলু মিয়া বলেন,অনিয়মের কারণে ৩/৪ বার কাজ বন্ধ করে দেয় হয়েছিলো। এ নিয়ে তাদের সাথে একাধিকবার বাকবিতন্ডাও হয়েছে আমাদের। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে প্রকল্পের ঠিকাদারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি।
সেতু নির্মাণে তদারকীর দায়িত্বে থাকা নকশাকার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. মইনুল ইসলাম বলেন,দেখেছি সেতু। বৃষ্টির কারণে এটি হয়েছে। ঠিকাদারের সাথে কথাও হয়েছে আমার। দু’একদিনের মধ্যে এসে মেরামত করে দেবেন তিনি।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন,এখানে কাজ করা অনেক জটিল ছিলো। সংযোগ সড়ক থেকে স্লোপ যে পরিমাণ লম্বা থাকার কথা ছিলো সেটা করতে পারিনি আমরা। জমির মালিকরা জায়গা দেয়নি আমাদের। আর সে কারণেই এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।