আবদুল লতিফ জনি
দেশটা মোদের সোনা ভরা, মানুষ দয়াবান;
হাজার বছর করলো শাসন- মুঘল আর আফগান।
কামার, কুমার, জেলে, তাঁতীর ছোট্ট কুঁড়ে ঘর;
স্বর্গ সুখে থাকতো সবাই সারাটি বছর।
পুকুর ভরা মাছ ছিল, গোলা ভরা ধান;
ফসল ভরা মাঠেই ছিল কৃষক ভাইয়ের প্রাণ।
খাল-নদীর ভরা জলে মাঝি-মাল্লার গানে;
জারি, সারি, ভাটিয়ালী বাজতো মধুর তানে।
দুষ্টু ছেলে, দস্যি মেয়ে খেলতো নানান খেলা,
আম কুড়াতে, জাম কুড়াতে ছুটতো সারাবেলা।
পূজা, পার্বণ, ঈদের মেলায় কাটতো সুখের দিন,
মধুর স্মৃতির ক্ষণগুলো সেই- আজো অমলিন।
কুমার বিকায় মাটির কলস, নানান থালা-বাটি,
কামার বিকায় খুন্তি, কুড়াল, বর্শা আর চাপাতি।
জেলে নৌকায় জাল নিয়ে যায়- নদীর বাঁকে বাঁকে,
শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা বুনে তাঁতীর জীবন থাকে।
তাঁতের কাপড়- জামদানী আর মসলিনের সুনাম,
রাজ ললনার অঙ্গে শোভায় বাড়লো শাড়ির দাম।
পর্তুগিজ আর ব্রিটিশ জাতি আসলো বণিক বেশে,
সুখের আলো বিলীন হলো- আশাও গেলো শেষে।
ধনে-ধান্যে, হীরা-মতির পূর্ণ মহাদেশ,-
লুটে নিলো সোনা-দানা, শূন্য মাথার কেশ!
ভাইয়ে-ভাইয়ে বাঁধলো বিরোধ, ছিন্ন জাতির মন,
দু’শ বছর পরেই পেলাম স্বাধীনতার ক্ষণ,
ধন ফুরালো, মান ফুরালো বর্গী গেলো ফিরে,
এখনো যে শংকা জাগে জীবন নদীর তীরে।।