নিজস্ব প্রতিবেদক◊◊
গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে একে অপরের পরিপূরক হিসাবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ অভিমত প্রকাশ করে যে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার একটি অপরটিকে শক্তিশালী করে তোলে। গণতন্ত্র ছাড়া মানবাধিকার কল্পনা করা যায় না। আবার মানবাধিকার অবহেলা করে নিজেকে গণতান্ত্রিক বলেও দাবি করা যায় না।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) ”১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস” উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘে ‘মানবাধিকারের’ সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। মানবাধিকারের এই সনদটির বয়স ৭৬ বছরে। এই ৭৬ বছরে বিশ্বে মানবাধিকারের ধারণা ও সূচকের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এই ৭৬ বছরেও প্রশ্ন থেকে যায় ব্যাপক অর্থে মানুষে-মানুষে বৈষম্য কি কমেছে? এক কথায় এর উত্তর মেলে, না। ধনী-দরিদ্রের, ক্ষমতাশালী-ক্ষমতাহীনের মধ্যে বৈষম্য এখনও কমেনি। বরং অনেক ক্ষেত্রে বেড়েই চলেছে। এক কথায় বলা যায়, মানবাধিকারের সংস্কৃতি এখনও পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি। বিশ্বের খুব কম দেশ মানবাধিকারকে একটি সংস্কৃতি হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, উন্নত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মূল শক্তি হিসেবে কাজ করেছে টেকসই গণতন্ত্র। এ দুটোর অনুপস্থিতেও দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নতির শিখরে উঠতে পারে। তবে মানবিক রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। মানবিক উন্নয়নের সঙ্গে শিক্ষার বিকাশ, সাংস্কৃতিক অগ্রগতি ও রাজনৈতিক সচেতনতার সম্পর্ক গভীর। এগুলোর বিকাশ ঘটলে মানবাধিকার লঙ্ঘন বা অস্বীকারের সংস্কৃতি গড়ে ওঠতে পারে না।
তারা বলেন, সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ৭৬তম বছরে এসে আজকে এই কথাটি সবাইকে একবাক্যে স্বীকার করতে হবে, যে মানবাধিকার ঘোষণাপত্রটি যে উদ্দেশ্য নিয়ে গৃহীত হয়েছিল এই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় তা অর্জনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ না হলেও অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে চলমান ফিলিস্তিন ও কাশ্মির সমস্যা, সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া সঙ্কট এবং মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সন্ত্রাসী কর্তৃক সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত গণহত্যা বিশ্বের মানবতাবাদী মানুষকে আশাহত করেছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, দেশে মানবাধিকার নিয়ে অনেক প্রশ্নেবর সৃষ্টি হয়েছে। যার কোন উত্তর শাষকগোষ্টির কাছে অনুপস্থিত। প্রশ্ন থেকে যায় আমাদের নেতারা কি বোঝেন সংকট সৃষ্টি করা মানবাধিকার লঙ্ঘন? রাজনৈতিক সহমর্মিতার অভাব যেমন অতীতে ছিল এখনো তেমনি পরিস্থিতি বিরাজমান। সরকার পরিবর্তনের উপায় হিসেবে নির্বাচন বার বার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। যা কখনোই শুভ নয়, তেমনি বিরোধীদলকে বন্দিদশায় নিয়ে যাওয়া আগামী দিনগুলোকে জটিল করে তোলে। সহানুভূতির রাজনীতি হোক আজকের দিনের প্রত্যয়। বিজয়ের মাসকে যেন আমরা কোনোভাবেই কলংকিত না করি, সেই দাবি সরকার ও বিরোধীদলের কাছে।