আব্দুল হালিম নিশাণ◊◊
সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর গঙ্গাপুর বাজারের প্রায় অর্ধাংশ সরকারি জমি দখল করে বিল্ডিং পাকা ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে জুবায়েরের বিরুদ্ধে।
সরকারি বিধি মোতাবেক লিজ অনুমোদন বিহীন কোন হাট বাজারে বিল্ডিং বা পাকা ঘর নির্মাণ করা যাবে না। সরকারি বিধিমালায় এমন সূত্র বর্ণিত রয়েছে।
স্থানীয়দের মতে জানাগেছে, জমি দখলমুক্ত করতে গেলে নানা রকম বাধাঁ আসে। আবার কোনো কোনো সময় সোনারগাঁয়ের ভূমি কর্মকর্তারা অবৈধ উৎকোচ লূটিয়ে, এদের বিরুদ্ধে আর আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার হদিস থাকে না। এসব মূল্যবান জমি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এর স্থায়ী দোকানের অংশ একসনা বন্দোবস্ত দেওয়া হলে তা থেকে প্রতিবছর বিপুল অংকের টাকা রাজস্ব আয় হতো। কিন্তু তা নেই ! গঙ্গাপুর বাজারের দালাল, ভূমিদস্যু ও অবৈধ দখলবাজ চিহ্নিত জুবায়ের সিন্ডিকেট দিন দিন বিল্ডিং-ঘরবাড়ি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি সরকারি বিধান ভঙ্গ করে, এলাকায় এমন কর্মকাণ্ডে বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন।
ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে অনেক বাজার হাটবাজার রয়েছে। প্রতিবছর উপজেলা পরিষদ থেকে ইজারা দেওয়া হয়। প্রতিটি বাজারের সরকারি জমিতে দখলদারদের অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। জনপ্রতিনিধি কিংবা ইজারাদার পরিবর্তন হলে এসব স্থাপনার মালিকানারও পরিবর্তন হয়। সবচেয়ে বেশি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে কাঁচপুর বাজারে। এছাড়াও কাজীপাড়া, নয়াপুর বাজার, মোগরাপাড় পৌরসভা বাজার, বৈদ্দর বাজার সহ একাধিক হাট বাজারে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
জানা যায়, ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর তৎকালীন প্রশাসন ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেক হাটবাজারে অভিযান চালিয়ে দখলদারদের উচ্ছেদ করে। সে সময় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ হয়। কিন্তু পরবর্তীতে গত কয়েক বছর ধরে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। গঙ্গাপুর-কাজীপাড়া বাজারে একটি চক্র সরকারী জমিতে ঘর তৈরি করে জামানত ও ভাড়া বাবদ অবৈধ ভাবে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, একসময় যেসব জায়গায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতো, সেসব জায়গা দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পৌরসভার অনেক কর্মচারী ও হাট ইজারাদার মিলে একের পর এক ইটের ঘর নির্মান করে চলেছেন। নতুন করে হাটের পূর্ব-পশ্চিম পাশে চলছে মার্কেট নির্মাণ। কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছেনা যোবায়ের বাহিনীর মতো এসব অবৈধ দখলদাররা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গঙ্গাপুর বাজার এলাকার নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক ৪-৫ জন লোকে সাংবাদিকদের বলেন, জুবায়েরের নেতৃত্বে ৭-৮ টির মতো অবৈধ পাকা ঘর স্থাপনা নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারী জমিতে ইটের ঘর নির্মাণ করে অন্যজনের কাছে থেকে জামানত নেওয়া কিংবা ভাড়া দেওয়া সবকিছুই অবৈধ। বর্তমান ইজারাদার হাটের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই, তারাও এ বিষয়টি সম্মতি দেননি।
এবিষয়ে জুবায়ের হোসেন বলেন, আমি সরকারি ভাবে লিজ নিয়ে বিল্ডিং বা পাকা ঘর নির্মাণ করছি। ভবিষ্যতে এখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করবো। তিনি বলেন, এ বাজারের অর্ধাংশ জমিই আমার বাপ-দাদার। আমি ইচ্ছে করলে সবই পারি বলে এমনটি জানান জুবায়ের।
গঙ্গাপুর বাজারের ইজারাদার সোহেল রানা সাংবাদিকদের জানান, বিগত দিনে এই বাজারের কোন ধরনের শৃঙ্খলা ছিল না। এখন আমি ইজারা নিয়েছি, বাজারের একটি সুষ্ঠু শৃঙ্খলা ফিরে আসার জন্য। জুবায়ের গংরা যেভাবে অবৈধভাবে বিল্ডিং বা পাকা ঘর নির্মাণ করতে চলেছেন। এটা তিনি সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করেই, এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
এবিষয় সোনারগাঁ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: ইব্রাহিম বলেন, অবৈধ ভাবে বিল্ডিং বা পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগে সাদিপুর ইউনিয়ন ভূমি নাজিরকে বিষয়টি মুঠোফোনে অবহিত করলে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা যায়। তখন সরেজমিনে গিয়ে কাজ বন্ধেরও হুকুম প্রদান করে থাকেন তিনি। তিনি বলেন, কেউ যদি অবৈধ ভাবে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করে থাকে, তবে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।