সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে অন্যান্য খাতের বিভিন্ন কোম্পানিগুলোতে যেমন কর ন্যায্যতা নেই তেমনি নিষ্কাশন শিল্প তথা খনি কেন্দ্রীক খাতগুলোতে নিয়োজিত দেশী-বিদেশী কোম্পানিগুলোতে কর ন্যায্যতা নেই। কর ন্যায্যতার এ অভাব জনজীবনে বঞ্চনা সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে মূলতঃ কয়লা, তেল ও গ্যাসকে কেন্দ্র করে এ শিল্পের বিকাশ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ফসিল ভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদন এ শিল্পের ন্যাযতাই আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। তথাপি যতক্ষণ এটা টিকে থাকবে ততক্ষণ অবশ্যই ন্যায় ভিত্তিক হতে হবে। এ শিল্পে কর্পোরেশনগুলো যে মুনফা-অতিমুনাফা করে তা করের আওতার বাইরে থাকতে পারে না। অধিকন্তু এ ধরনের লাভজনক শিল্পে কর সুবিধা বা কর অবকাশ দেয়ার সুযোগ থাকা উচিত নয়। কিন্তু গতানুগতিকভাবে এ শিল্প সুবিধাগুলো পেয়ে আসছে যা কিনা কর অন্যায্যতা ঘটায়। এতে করে জনগণের করের উপর যে অধিকার তা হরন করে।
এতদসত্ত্বেও খনি ও কুপ অঞ্চলের জনগোষ্ঠী বিরূপ পরিস্থিতির শিকার। খনির বিস্তারসহ নানান রকম প্রভাবে এলাকার জনগণ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছে। তাদের জীবন-জীবীকা হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। বিভিন্ন সময় খনিতে দূর্ঘটনায় যেসব শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের ক্ষতিপূরণও যথাযথভাবে দেয়া হয় না। তাছাড়া এ শিল্পের রয়েছে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত দায়। এ শিল্প বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। যা পরিশেষে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটায়। এ শিল্প হতে সময়ের পরিক্রমায় বের হয়ে আসতে হবে। গ্রহণ করতে হবে বিকপ্ল জ্বালানী ব্যবস্থা। যা আমাদের পরিবেশ, প্রতিবে্শ, জনগণ ও পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখবে।
খনি শিল্পের এমন পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি সমূহঃ
১। খনি শিল্পে কর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা কর।
২। করের অর্থ জনগণের স্বার্থে ব্যবহার কর।
৩। এ শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন ভাতাদি দাও।
৪। ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী ও শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দাও।
৫। পুনঃনবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবস্থায় উত্তরণের জন্য বিদ্যমান জ্বালানী ব্যবস্থাকে যৌক্তিকীকরণ কর।
৬। এ শিল্পে কর ফাঁকি বন্ধ কর।
৭। খনিজ ও জ্বালানি শিল্পে কর সুবিধা বন্ধ কর।
৮। খনিতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী কে পুনর্বাসন কর।
৯। কর্পোরেশনের অতি মুনাফার উপর কর আরোপ কর।
১০। পৃথিবী ও জনসমাজকে রক্ষায় কর কাজে লাগাও।