প্রথমবারের মতো ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন পরীক্ষায় শতভাগ সফল হওয়ার দাবি করেছেন চীনা গবেষকরা। তারা বানরের শরীরে ওই ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক প্রয়োগ করে সফল হয়েছেন।
গবেষকদের দাবি, চীনা সংস্থা ‘সিনোভ্যাক বায়োটেক’ এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে পিকোভ্যাক (PiCoVacc)। আর ওই সংস্থার গবেষকদের পরীক্ষাতেই এসেছে ইতিবাচক ফলাফল।
ভারতীয় বানরের প্রজাতি ‘রেসাস ম্যাকাকেস’-এর শরীরে এই প্রতিষেধক কাজ করেছে বলে জানা গেছে।
গত ৬ মার্চ সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি রিসাস ম্যাকাকিউস প্রজাতির একদল বানরের শরীরে নতুন ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করেন চীনা গবেষকরা। এর তিন সপ্তাহ পরে বানরগুলোকে করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে নেয়া হয়।
এক সপ্তাহ পরে দেখা যায়, যেসব বানরের শরীরে বেশি মাত্রায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছিল তাদের ফুসফুসে করোনার উপস্থিতি নেই। অর্থাৎ ভ্যাকসিনটি ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছে। আর যেসব বানরকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়নি তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং তাদের শরীরে নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই ওই ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করছে চীনা গবেষকরা। ইতিমধ্যে তারা মানবদেহেও পিকোভ্যাকের ট্রায়াল শুরু করেছে। অন্যদিকে চীনের মিলিটারি ইনস্টিটিউটের তৈরি আরও একটি ভ্যাকসিন পরীক্ষা চলছে মানব শরীরে।
এদিকে দিন দুয়েক আগে ইঁদুরের ওপর চালানো ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় সফল হওয়ার দাবি করেছেন ইতালীয় গবেষকরা। তারা জানান, ইঁদুরের দেহে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি করার পর তা মানব কোষেও কাজ করবে। রোমের স্প্যালানজানি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞরা করোনার এই প্রতিষেধক তৈরি করেছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই প্রতিষেধক ইঁদুরের শরীরে প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া গেছে। এবার এটি মানব দেহেও প্রয়োগ করলে সফলতা মিলবে। রোম থেকে এই দাবির পর নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ব।
এর আগে সুখবর দিয়েছে অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউট-ও। সেখানে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভ্যাক্সিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। তারা আশা করেছেন, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ কোভিড-১৯’র ভ্যাকসিন আবিষ্কার সম্ভব হবে।