মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে তোপখানা রোডস্থ বাাংলাদেশ শিশু কল্যাণ হলরুমে (২য় তলা) বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে ৯০’র ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম রূপকার, মরহুম এডভোকেট সাইফুদ্দিন আহমেদ মনিকে স্মরণ এবং ৯০ থেকে বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান এর সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান শামীম এর সঞ্চালনায় স্মরণসভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ডাকসুর সাবেক এজিএস ও সাবেক সংসদ সদস্য নাজিমুদ্দিন আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, মুসলিম লীগ- বিএমএল এর সভাপতি এডভোকেট জুলফিকার চৌধুরী বুলবুল, এনডিপি’র মহাচিব মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ডিএলএর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খোকন দাস, এলডিপি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট আরঙ্গজেব বেলাল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন, রোটারিয়ান এম নাজমুল হাসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, সাবেক ছাত্রনেতা শাজাহান মিয়া সম্রাট, মুন্সিগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি সেলিনা আক্তার বিনাসহ ৯০’র ছাত্র গণভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সর্বদলীয় ছাত্র-ঐক্যের শীর্ষ নেতা এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি এডভোকেট সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং ‘৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের বীর সেনানী হিসেবে সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি গণতন্ত্র পুণঃরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রামে যে সাহসী ও বীরোচিত ভূমিকা পালন করেছেন তা দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধেও তিনি ছিলেন নির্ভিক কন্ঠস্বর। তিনি ছিলেন একজন নীতিবান ও সজ্জন মানুষ। তার মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শুণ্যতার সৃষ্টি হলো তা সহজে পূরণ হবার নয়। ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনকরা সাইফুদ্দিন মনি বেশ কয়েকবার কারাবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় এরশাদ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন।
তিনি দীর্ঘদিন থেকে তিনি ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এক সময় তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। অতপর চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার বারডেম হাসপাতালে (মিরপুর) ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১৩ অক্টোবর শুক্রবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে তার লাশ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে নেওয়া হয়। শুক্রবার বাদ মাগরিব ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের নিজগ্রাম মহেশপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। সেখানে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাকে শেষ বারের মতো দেখতে আসেন।
এনডিপি’র মহাসচিব মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, বাংলাদেশে অনেক জাতীয় এবং শীর্ষ নেতা রয়েছে। কিন্তু সাইফুদ্দিন মনি’র মতো কর্মীবান্ধব কোন নেতা বাংলাদেশে আর জন্মগ্রহণ করবে না। তিনি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে পাশ করে এডভোকেট হয়েছিলেন। তার পরেও পেশায় না গিয়ে তৃণমূল রাজনীতি করেছেন। চির বিদ্রোহী অলি আহাদের নেতৃত্বে ডিএল’র রাজনীতি করতেন। জীবনে অনেক সুযোগ এসেছিল, কোনদিনই ডিএল ছেড়ে অন্যদলে যায়নি। তিনি সারাদিন বন্ধুদের কাছে হেটে হেটে টাকা সংগ্রহ করতেন। বিকেল বেলা সেই টাকার সবটুকুই তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে খরচ করে পায়ে হেটে অনেকদিন বাসায় যেতেন। তার অগ্নিঝড়া ছড়া ও কবিতা রাজনীতিতে একটি বিশেষ অবস্থান সৃষ্টি করেছিল। সব দল ও মতের সাথে তার একটি নিবির সম্পর্ক ছিল। বর্তমান সংকটময় মুহুর্তে তার মতো একজন জাতীয় বীরের বেশি প্রয়োজন ছিল। তিনি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবি করেন।