রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি♦
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবে চলছে। এসএসসি পরীক্ষার ৬টি কেন্দ্র, ৬টি ভেন্যু, দাখিল পরীক্ষার ৩টি কেন্দ্র, ৩টি ভেন্যু, ভোকেশনাল পরীক্ষার ১টি কেন্দ্র, ১টি ভেন্যুতে মোট ৫ হাজার ৮৩৮জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। নকল মুক্ত পরীক্ষায় অভিভাবকরা খুশি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জের এসএসসি পরীক্ষার প্রতি কেন্দ্র ও ভেন্যুতে ট্যাগ অফিসার, কেন্দ্র সচিব, সহকারী কেন্দ্র সচিব ও হল সুপার নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ভিজিল্যান্স টিম সকল কেন্দ্র ও ভেন্যু পরিদর্শন করেন। উপজেলার বিভিন্ন বিভাগের সরকারি কর্মকর্তাগণ ট্যাগ অফিসার হিসেবে নিয়োজিত থেকে থানা ভবন থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে পুলিশ অফিসারদের সাথে নিয়ে নিজনিজ দায়িত্বরত কেন্দ্র কিংবা ভেন্যুতে চলে যান। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০/১৫ মিনিট আগে প্রশ্নের প্যাকেট খুলে পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের অনুপাতে ভাগ করে রাখেন। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৫মিনিট আগে হলে হলে প্রশ্ন পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়া ভেদ করে প্রশ্ন কেন্দ্রে বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের তল্লাশি করে কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হয়। প্রবেশপত্র, কলম, স্কেল, রাবার, সাপনার, এনালক হাতঘড়ি ছাড়া বই, খাতা, মোবাইল ফোন নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। কক্ষ পরিদর্শকরাও মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারে না।
এক স্কুলের শিক্ষার্থী অন্য স্কুলের শিক্ষক কক্ষ পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। কেন্দ্রে দায়িত্বের বাহিরে থাকা কোন শিক্ষক, শিক্ষিকা, অভিভাবক, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য কাউকেই পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। পুলিশ ও আনসার কেন্দ্রের গেইটে নিয়োজিত থাকেন। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশের ফটোকপির দোকানগুলো আগে থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখানে কোন সিন্ডিকেট নেই। ট্যাগ অফিসারগণ সময়মতো প্রশ্ন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। পরীক্ষা শেষে ফিরে আসেন। পরীক্ষাকেন্দ্রে কোন অনিয়ম করার সুযোগ নেই। শিক্ষকরা নকল পৌঁছে দেন তা আবার শিক্ষার্থীর জানানোর ঘটনা কাল্পনিক।
রূপগঞ্জের সকল এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষাকেন্দ্রে সরকারের নির্ধারিত আইন মেনেই সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা হচ্ছে। এখানে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।
জনতা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব মোক্তার হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে শান্তিপূর্ণভাবে নকল মুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরীক্ষায় অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই।
এইচআর মডেল স্কুলের সহকারী কেন্দ্র সচিব শ্রী চরণ দাস বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগে কিংবা পরে অভিভাবকদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল নেই।
কাঞ্চন ভারতচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব মুজিবর রহমান বলেন, তল্লাশি করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হলে প্রবেশ করানো হয়। বহিরাগত কাউকেই পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।
মুজিবর রহমান ভুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সহকারী সচিব রিনা আক্তার বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন কক্ষ পরিদর্শকসহ শিক্ষার্থীদের মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।
সহিতুন্নেছা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব শাহ্ মোঃ নাজমুল হাসান বলেন, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও এসএসসি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে। পরীক্ষা চলাকালীন দায়িত্বশীল ছাড়া কাউকেই পরীক্ষার কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভিজিল্যান্স সার্বক্ষণিক পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করছেন।
ভুলতা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব ও রূপগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ডঃ আব্দুল আউয়াল মোল্লা বলেন, রূপগঞ্জের কোন কেন্দ্রেই অনিয়মের ছোঁয়া নেই। নকল নেই। বহিরাগতদের আনাগোনা নেই। দায়িত্বশীল ব্যক্তি ছাড়া কাউকেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।
সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, নকলমুক্ত পরিবেশেই পরীক্ষা চলছে। কোন অনিয়ম করার সুযোগ নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ইসমাইল বলেন, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশাসন তৎপর। রূপগঞ্জের সকল কেন্দ্র ও ভেন্যুতে নকলমুক্ত পরিবেশেই পরীক্ষা চলছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফয়সাল হক বলেন, সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সকল নিয়মের মধ্যেই এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলছে। কোন অনিয়ম করার সুযোগ নেই। অনিয়ম পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে কোন রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এখানেও তার ব্যতিক্রম নেই। সরকারের নির্দেশিত আইন অনুযায়ী পরীক্ষা চলছে। ব্যাহত হলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নকল সরবরাহকারী, পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে অপপ্রচার কিংবা বিভ্রান্তকারীদের ছাড় দেয়া হবে না।