দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতেও দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন লুইস গ্রেগরি। ইংলিশ অলরাউণ্ডারের চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্সে পঞ্চম ম্যাচে এসে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিল নতুন অধিনায়কের অধীনে দারুণভাবে উজ্জীবিত রংপুর। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারিয়েছে ৬ উইকেটের ব্যবধানে ৮ বলে হাতে রেখেই।
রেঞ্জার্সদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে আভিস্কা ফার্নান্ডো ছাড়া দাঁড়াতে পারেননি কেউই। যাতে আগেরমতো বড় স্কোর গড়তে পারেনি স্বাগতিকরা। মুস্তাফিজ-গ্রেগরিদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে চ্যালেঞ্জার্সরা। জবাবে চলতি আইপিলে নিজেদের প্রথম জয়ের লক্ষ্যে নামা রংপুর রেঞ্জার্স লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ৪ উইকেট হারিয়েই।
রংপুরের এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন ইংলিশ অলরাউণ্ডার লুইস গ্রেগরি। বল হাতে দুই উইকেট নেয়ার পর ব্যাট হাতেই জ্বলে ওঠেন এদিন। খেলেন ৩৭ বলে ৭৬ রানের ম্যাচ জয়ী এক বিধ্বংসী ইনিংস। যে ইনিংসে ছিল পাঁচটি ছক্কার সাথে ছয়টি চারের মার।
তবে এসময় তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন ফজল মাহমুদ। মূলত এ দুজনের ৯১ রানের অনবদ্য জুটির কাছেই প্রথম দ্বিতীয় পরাজয়ের স্বাদ নিতে হলো আগের ম্যাচেই রেকর্ড গড়া উড়ন্ত চট্টগ্রামকে। মাত্র ৩৪ বলের ওই জুটিতে ফজলের অবদান ছিল ঝড়ো ৩৮ রান। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ২১ বলের ইনিংসে ছিল দুটি ছক্কা ও চারটই চারের মার।
তবে রংপুরের এই প্রথম জয়ের শুরুটা হয়েছিল বেশ বাজেভাবেই। রুবেল-প্লাঙ্কেট-রানার তোপে মাত্র ৩৬ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে আরেকটি পরাজয় দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুণছিল সমর্থকরা। কিন্তু গ্রেগরি ও নতুন ক্যাপ্টেন টম অ্যাবেলের সংগ্রাম আর ফজলে মাহমুদকে নিয়ে গ্রেগরির ওই ম্যাচ জয়ী জুটিই ভেঙে দেয় পরাজয়ের বৃত্ত। ছিনিয়ে আনে নতুন এক জয়। যেখানে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত খেলে ম্যাচ সেরা হন লুইস গ্রেগরি।
এর আগে শনিবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের প্রথম জয়ের খোঁজে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে মাঠে নামে রেঞ্জার্সরা। অন্যদিকে চ্যালেঞ্জার্সরা নামে ষষ্ট জয়ের খোঁজে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শুরু হওয়া এ ম্যাচে টস জিতে প্রতিপক্ষকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান রংপুরের নতুন অধিনায়ক টম অ্যাবেল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শূন্য রানে উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। যে আঘাতটি হানেন এদিন শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামা মুস্তাফিজুর রহমান। এদিন যেন প্রথমবারের মতোই নিজেকে খুঁজে পেলেন কাটার মাস্টার। স্বমহিমায় ফিরে স্মরণীয় করে রাখেন নিজের মাইলফলকের ম্যাচটি।
চার ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৩০ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। তাকে ভালো সঙ্গ দেন লুইস গ্রেগরি। ২৭ রানের বিনিময়ে এই ইংলিশ অলরাউণ্ডারও তুলে নেন ২টি উইকেট। বাকি তিনটি উইকেট ভাগ করে নেন মোহাম্মদ নবি, সাঞ্জিত সাহা ও মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।
একটি উইকেট পেলেও বোলিংয়ে তেমন মুগ্ধতা ছড়াতে পারেননি এই তরুণ। রান দিয়েছেন ৪২টি। যদিও কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছিলেন ডানহাতি এই পেসার। ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় কাজে আসেনি সেসব।
যে কারণে সর্বোচ্চ ৭২ রানের ইনিংস আসে আভিস্কা ফার্নান্ডোর ব্যাট থেকে। দুইবার জীবন পাওয়া এই ওপেনারের ৪০ বলের ওই ইনিংসে ছিল আটটি চার ও চারটি ছক্কার মার। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান আসে নুরুল হাসান সোহানের ব্যাট থেকে। অন্যদের দশোর্ধ ইনিংস মিলিয়ে শেষমেশ সাত উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রানের সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম।