শেখ সাখাওয়াত হোসেন, পাবনা থেকে।।
সারা দেশব্যাপী বহুল আলোচিত পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৫ জুন এই ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক স্বতন্ত চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহত হওয়ায় নির্বাচন স্থগিত হয়ে গিয়েছিল।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে কুমিল্লা সিটি, ছয় পৌরসভা ও ১৩৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
তিনি বলেন, একই দিনে তফসিলে ছয়টি পৌরসভা ও ১৩৫টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হবে। স্থানীয় সরকারের এসব নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ মে, বাছাই ১৯ মে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন ২৬ মে, প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ জুন।
তবে এ ব্যাপারে পাবনার সদর উপজেলা নির্বাচন কমিশনার কায়সার আহমেদ বলেন, আমরা নির্বাচন অফিস কোনও চিঠি এখনও হাতে পাইনি। তাই নির্বাচনের তফসিল নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারবো না। চিঠি হাতে হাতে পাওয়ার পরে পরবর্তী অবস্থা জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. আবু সাঈদ খান (৫২) ওরফে সাঈদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলম (৩৫) নিহত হন। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য পাবনা জেলার সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের সব (চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য, সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য) পদের নির্বাচন স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওইদিন সকালে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী (ঘোড়া মার্কা) সুলতান মাহমুদের সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন। এ সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের লোকজন বাধা দিলে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় সুলতান মাহমুদের চাচাতো ভাই আনারস প্রতীকের আরেক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপার্থী ইয়াসিন আলমসহ ২০ জনকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে সাঈদের লোকজন। আহতদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের মধ্যে ছয় জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাজশাহী নেওয়ার পথে নাটোরের বনপাড়ার গুরুদাসপুর পৌছালে মারা যান ইয়াসিন আলম।
এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহতের ঘটনায় আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন আবু সাঈদ খান ওরফে সাঈদ চেয়ারম্যান। বিভিন্ন ঘটনায় পাবনার আলোচিত এই আওয়ামী লীগ নেতা ৩১ জানুয়ারি কারাগারে পাঠান পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান।