নিজস্ব প্রতিবেদক:
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ করে দুর্নীতিমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলেই তাদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বুদ্ধিজীবীরা দেশ ও জাতির উন্নয়ন এবং অগ্রগতির রূপকার। তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, সৃজনশীল কর্মকান্ড, উদার ও গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনা জাতীয় অগ্রগতির সহায়ক। জাতির বিবেক হিসেবে খ্যাত দেশের বুদ্ধিজীবীরা তাদের ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি, যুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারকে পরামর্শ প্রদানসহ বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে বিপুল অবদান রাখেন।
রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্মরণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বুঝতে পেরেছিল, পরাজয় তাদের অনিবার্য। তাই পরিকল্পিতভাবে জাতিকে মেধাহীন ও পঙ্গু করতে দেশের বরেণ্য সব ব্যক্তিদের রাতের অন্ধকারে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছে। তাই সূর্য সন্তানদের জাতি সবসময়ই স্মরণ করবে।
তিনি আরো বলেন, আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকতেন সমাজের সর্বস্তরের বুদ্ধিজীবীরা। তারা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক-ভাবে বাঙালিদের বাঙালি জাতীয়তা-বোধে উদ্বুদ্ধ করতেন। তাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনই পরবর্তীতে রাজনৈতিক আন্দোলনের দিকে ধাবিত করে। এজন্য শুরু থেকেই বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ জলিল, জয়বাংলা মঞ্চের সভাপতি মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জেএসপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া প্রমুখ।
বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচী :
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আগামীকাল সোমবার সকাল ৮টায় মীরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া সকল শাখাকে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগ ও আদর্শ আর চলার পথটিকে আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে খুব ভালো ভাবে জাগ্রত করা প্রয়োজন। তাহলেই তারা উদ্বুদ্ধ এবং অনুপ্রাণিত হবে। তারা দেশের অন্যায় অমানবিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জাতিকে শক্তি ও সাহস যোগাবে। পুরো বছরের মধ্যে ১৪ ডিসেম্বর এলেই শুধু মাত্র বুদ্ধিজীবীদের কথা জাতি যেন স্মরণে আনে। এটা বাঙালি জাতির একটি চরম ব্যর্থতা।
নেতৃদ্বয় বলেন, একাত্তর পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশে যে শক্তিশালী ও স্বাধীন বুদ্ধিজীবী শ্রেনী গড়ে উঠেছিল তা প্রায় নেই৷ কেউ বিপদে পড়ার, কেউ আবার সুযোগ সুবিধা হারানোর ভয়ে চুপ থাকেন৷ সমাজের ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে তারা কোনো কথা বলেন না৷ আবার যারা বলেন তারা দলীয় চিন্তার বাইরে যেতে পারেন না৷ সরকারের প্রয়োজনীয় সমালোচনাও তারা করেন না৷ তাদের কাছ থেকে কোনো দিক নির্দেশনা পাওয়া যায় না৷