মো. মহসিন রেজা, শরীয়তপুর।।
শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের বেপারিকান্দি গ্রামে ভুমিহীনের জমি বন্দোবস্ত নিয়েছে ইটালি প্রবাসী হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী বেবী বেগম। এ ঘটনায় একই গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধা বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাস জায়গা ঘেঁষে ৩ তলা বাড়ি করেছেন ইটালি প্রবাসী হাফিজুর রহমান। খাশ জমির উপর দিয়ে দীর্ঘদিনের পায়ে হাঁটা একটি রাস্তা রয়েছে এ রাস্তা দিয়ে প্রায় ৬/৭ টি পরিবার যাতায়ত করে, পরিবার গুলো সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। রাস্তার উপর টয়লেটের ট্যাংকি নির্মাণ করায় তাদের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। বন্দোবস্ত বাতিলের আবেদনকারি মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন আবেদনে উল্লেখ করেন,কৃষি খাস জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিধান রয়েছে দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, নদী ভাঙ্গা পরিবার, বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা পরিবার, কৃষি জমি ও বাস্তুভিটাহীন পরিবার, জমিঅধিগ্রহণের ফলে ভুমিহীন হয়েছে এমন পরিবার ও বসতবাড়ি ও কৃষি জমি নাই কিন্তু পরিবারটি কৃষি নির্ভর এ শ্রেণির ব্যাক্তিবর্গই ভুমিহীন বন্দোবস্তোযোগ্য। তবে এসব শর্তের মধ্যে একটি ও ইটালী প্রবাসী হাফিজুর রহমান ও বেবী বেগমের নেই। তিনি আরো বলেন,নড়িয়া উপজেলাধীন নশাসন ইউনিয়ন ভুমি অফিসের আওতাধীন ২৩ নং নশাসন মৌজার মোঃ হাফিজুর রহমান পিতা আঃ আজিজ বেপারী বেবী বেগম স্বামী মোঃ হাফিজুর রহমান নশাসন ইউনিয়ন নড়িয়া জেলা কর্তৃপক্ষকে ভুলতথ্য দিয়ে খাস খতিয়ানের ২৬ শতাংস জমি ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে কবুলিয়াত নামা দলিল মুলে ভুমিহীন বন্দোবস্তের মাধ্যমে তাদের নিজ নামে নামজারী ও জমাভাগ হাসিল করেন। ভুমিহীন বন্দোবস্তোকারী আজিজ বেপারীর ছেলে মোঃ হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী বেবী বেগমের নামে ২৩ নং নশাসন মৌজায় বি,আর,এস ১৩৬৪ নং খতিয়ানে০.১৩৬৩ একর এবং সৃজিত ১৫৩২ নং খতিয়ানে০.১১১৩ একর রেকর্ডীয় জমি আছে এছাড়াও তাদের নামে আরও রেকর্ড ভুক্ত খতিয়ান আছে, তবু্ও কর্তৃপক্ষকে ভূল বুঝিয়ে করে হাফিজুর রহমান ও বেবী বেগম তাদের নিজ নামে বন্দোবস্তো করে নেন। অভিযোগ পেয়ে ইটালি প্রবাসী হাফিজুর রহমানের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, এই জমি আমি সরকারীভাবে নিয়েছি, কিভাবে দিয়েছে সেবিষয়ে ভূমি অফিস বলতে পারবে। প্রতিবেশী রাবেয়া বলেন, একই পরিবারে দুই ছেলে সহ বাপ-চাচা মিলে ৬ জন ইটালি থাকে, এরাতো টাকার গরমে সব কিছু করে ফেলে, আমাদের ভবিষ্যতে কি হবে? প্রতিবেশী আঃ রহিম বেপারি ও আফজাল বেপারি বলেন,তারা চাষবাস করার জন্য সরকারের কাছ থেকে খাশ জমি এনে সে জায়গার ভেতরেও বিল্ডিং করেছে, তারা ইতালী থাকে অনেক টাকার মালিক তারা কিভাবে বন্দোবস্ত পেলো তা আমাদের জানা নেই। নশাসন ভুমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) মোঃ মাসুদ বলেন, বেবি আক্তার ও হাফিজুর রহমান এরা বন্দোবস্ত পাওয়ার যোগ্য না। তারপরেও তাদের কিভাবে সাবেক ভূমি উপ সহকারি কর্মকর্তা সুমন দত্ত দিয়েছেন এটাতো আপনারা ভালো বোঝেন! সাবেক নশাসন ভুমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) সুমন দত্ত বলেন, আমার এখানে কোন হাত নেই। এটা জবাবদিহিতা করবে উপজেলা এসিল্যান্ড, আপনারা তার কাছে জিজ্ঞাসা করেন। আমি এবিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না। নড়িয়া উপজেলা এসিল্যান্ড মো: মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, আমার আগের এসিল্যান্ড এই কাজ করেছে। আমি নতুন এসেছি, এটা ঠিক হয় নাই, তদন্তকরে আমরা প্রতিবেদন দিয়ে ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।