বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ ও ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স সেল-রিসার্চ সেল যৌথ উদ্যোগে এক সভার আয়োজন করা হয়।
গতকাল (৩১ জুলাই)সকালে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে “চিকিৎসকদের গবেষণায় সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ-সুবিধা” শীর্ষক এক গবেষণা কর্মশালা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
একই সাথে এ বিষয়ক একটি গবেষণার ফলাফলও প্রকাশ করা হয়।
আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন, বিএসএমএমইউ এর মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
সেমিনারে বিজ্ঞ আলোচকবৃন্দের আলোচনায় ও গবেষণায় প্রাপ্ত সুপারিশসমূহে চিকিৎসকদের গবেষণায় সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির লক্ষ্যে।জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর যৌথ ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে। গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা ও প্রয়োজনীয় ফান্ড নিশ্চিতকরণের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সেমিনার ও কর্মশালায় মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চিকিৎসকদের মধ্যে দক্ষতা বৃদ্ধি, তথ্য আদান-প্রদান, নিয়ম-নীতি বিষয়ক সহায়তা এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব সহ গবেষণার কাজ বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে গবেষণা সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করছে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে একটি সমৃদ্ধ গবেষণা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারে, যার ফলে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, উদ্ভাবনী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং কার্যকরভাবে দেশের স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, বিএসএমএমইউ একটি মানসম্মত জার্নাল প্রকাশে কঠোর পরিশ্রম করছে। তিনি জানান, জার্নালটি ইন্ডেক্সিং হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স এর চেয়ারম্যান এবং প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ আতিকুল হক, পিএইচডি, গবেষণায় চিকিৎসকদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির উপর চলমান গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।
তাতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি এবং নতুন উদ্যোগ প্রণয়নের জন্য গবেষণা অপরিহার্য। বাংলাদেশের চারটি টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতালের মোট ৫০০ জন চিকিৎসক এই গবেষণায় অংশ নেন। যদিও চিকিৎসকদের গবেষণা সম্পর্কে কিছু ধারণা রয়েছে, তবে মাত্র ১২.৮ শতাংশ আন্তর্জাতিক জার্নালে কোনো ম্যানুস্ক্রিপ্ট জমা দিয়েছেন। প্রায় ৩.৮ শতাংশ চিকিৎসকের গবেষণা ম্যানুস্ক্রিপ্ট লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ১৫.৬ শতাংশ চিকিৎসক SPSS বা STATA এর মতো পরিসংখ্যানগত সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন।
গবেষণা করার প্রধান বাধাগুলি হল পেশাগত কাজের অতিরিক্ত চাপ, গবেষণা সম্পর্কিত জ্ঞানের কিছুটা অভাব, অনুদান না থাকা এবং গবেষণায় পূর্ব জ্ঞান কিছুটা কম থাকা। গবেষণার প্রস্তাবিত সুপারিশগুলি ছিল গবেষণা অনুদান প্রস্তাবনা লেখার বিষয়ে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ এবং একাডেমিয়ায় একটি গবেষণা সংস্কৃতির সামগ্রিক প্রতিষ্ঠা ও প্রচার নিশ্চিত করা।এছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বি ইউ এইচ এস এর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এর কনভেনর অধ্যাপক ডা. আহমেদ মোস্তাক রাজা চৌধুরী, ইউজিসি এর অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ শাখার গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এম মোস্তফা জামান প্রমুখ।
সঞ্চালনা করেন, পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিন, পিএইচডি। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা চ্যালেঞ্জ, সুযোগ, গবেষণা বৃদ্ধিতে সরকারের ভূমিকা এবং গবেষণা উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকা সহ চারটি বিষয়ের উপর একটি উন্মুক্ত আলোচনা করেন এবং প্যানেলিস্টদের গুরুত্বপূর্ণ আলচনার মাধ্যমে কর্মশালাটি শেষ হয়। গবেষণা কর্মশালায় বিভিন্ন টারশিয়ারি কেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক, ইউনিভার্সিটি, এনজিও, আইএনজিও এর প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, গবেষক এবং সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।