নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আইএলওর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে বেকারত্বের হারের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রতিবছর যে সংখ্যক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে পাস করে বের হচ্ছে তার অর্ধেককেও চাকরির নিশ্চয়তা দিতে পারছে না সরকার। সুতরাং বেকারত্বকে খুব কম সময়ে যেসব দেশ সমাধান করেছে সেসব দেশের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট রাজনীতিক, কলাম লেখক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
তিনি বলেন, দেশগ্রুপের এম. আর. ফুড এন্ড ক্যামিক্যাল কোং-এর মত ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারীদেরকে সরকারের উচিত পৃষ্টপোষকতা করা। সে ক্ষেত্রে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা উচিত।
শুক্রবার (২ অক্টোবর) তোপখানার বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ ভিআইপি লাউঞ্জে ‘কর্মসংস্থান, জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চয়তা’ শ্লোগানকে সামনে রেখে দেশগ্রুপের এম. আর. ফুড এন্ড ক্যামিক্যাল কোং আয়োজিত মাসিক বিক্রয় সম্মেলন সেপ্টেম্বর ২০২০’র অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনায় সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশের সব শিল্প খাতেই পড়েছে। এ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প খাত ব্যাপক ক্ষতির মুখে রয়েছে। ফলে এ খাতের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, অর্থায়ন পেতে সমস্যা পোহাতে হচ্ছে, বিক্রিতে বড় ধরনের পতন হচ্ছে এবং বেকারত্ব বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, উদ্যোক্তারা ব্যবসা থেকে বের হয়ে গেলে তাদের ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। তাই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের শনাক্ত করতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তাদের ডাটাবেইস তৈরি করতে হবে। তাদের রিটেইন্ড আর্নিংস কম হলেও, তারাই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।
এম. আর. ফুড এন্ড ক্যামিক্যাল কোং ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে মূল বক্তব্য প্রদান করেন রাজনীতিক ও মানবাধিকার সংগঠক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বক্তব্য রাখেন কোম্পানির সিইও আরিফুল ইসলাম রনি, জেনারেল ম্যানেজার মো. নাসির উদ্দিন, ন্যাশনাল সেলস্ ম্যানেজার মাহাফুজুল ইসলাম, মো. রফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার সেলস ম্যানেজার, এরিয়া ম্যানেজারগন।
মূল বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের সবচাইতে বড়ো চ্যালেঞ্জ হলো বেকারত্ব সমাধান করা। এজন্য অবশ্যই আমাদের কোরিয়া এবং চীনের দিকে তাকাতে হবে। ১৯৫৪ সালে কোরিয়া সারা বিশ্ব থেকে সাহায্য গ্রহণ করত; মাত্র ৩০ বছরে কোরিয়া সাহায্যদাতা দেশে পরিণত হয়েছে। চীনের জনসংখ্যার আধিক্য থাকা সত্ত্বেও তারা তাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, কোরিয়া ও চীনের বেকারত্ব দূরীকরণে সবচাইতে অবদান রেখেছে কর্মমুখী শিক্ষা। যা আমাদের দেশে এখনো গড়ে ওঠেনি। একইসঙ্গে কর্মমুখী কিংবা কারিগরি শিক্ষার দিকে মনোযোগী হতে আমাদের অভিভাবকদের মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ মফিজুর রহমান লিটন বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে উদ্যোক্তা শ্রেণীর বিকাশ সাধন করা জরুরি। সেজন্য আগ্রহী উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করা সরকার কিংবা নীতিনির্ধারকদের দায়িত্ব। শিল্পকারখানা তৈরিতে আগ্রহীরা পুঁজির জন্য প্রথমেই ব্যাংকের কাছে যায়। বেকার সমস্যা সমাধানে উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে ব্যাংকের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। সুদ বিহীন ঋণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখা সম্ভব।