সবাই যখন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে, আমি তখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। কিভাবে পরীক্ষা দেব, আদও দিতে পারবো কিনা সেই চিন্তায় আমার ঘুম আসে না। নাওয়া, খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রী এবং পুলিশ কমিশনারে আমি দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমি আশঙ্খা করছি ওরা আমাকে বাঁচতে দেবে না। আমাকে পেলে হয় অপহরণ করবে না হয় ধর্ষণ করবে। ওরা আমার মা সোনিয়া বেগমকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। আমার বড় খালা নাসিমা বেগমের ঘরবাড়ী লুটপাট করেছে। গত ১ বছর আমরা ৪-৫টি পরিবার পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ওরা এতই শক্তিধর, ওদের নামে মামলা হলে বলে ওরা গ্রেফতার হবে না। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, ওদের শক্তির উৎস কোথায়। আমি কি পরীক্ষা দিতে পারবো না। আমি সেই স্কুলের ছাত্রী, আপনি যেই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছেন।
আমি ছায়েরা খাতুন আজিমপুর গর্ভনমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে এবারে এস.এস.সি পরীক্ষার্থী। আমার পরীক্ষার কেন্দ্র ওয়েষ্ট এন্ড হাইস্কুল আজিমপুর, ঢাকা, রোল নং-৪২৬৮৮৩, রেজি: ২১১০৯৬৭০৫৫, সেশন-২০২২-২০২৩। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে পুরান ঢাকা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী স্বপন গংরা আমাকে গুম-অপহরন করতে পারে, আমি নির্ভয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে গতকাল (১২ ফেব্রুয়ারি) সোমবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমার মা-বাবা ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছি।
মামি শাশুড়িকে ধর্ষণ ও পরিবারের সদস্যদের অভিযুক্ত নির্যাতনকারী স্বপনের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি চান এক নির্যাতিত পরিবার। তারা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অভিযুক্ত স্বপন ভুক্তভোগী নারীর ভাগিনা হন।
ইতিপূর্বে এ বিষয়ে আমার পরিবারের সদস্যরা ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, দুপুর ১২টায় সেগুনবাগিচা ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তাঁরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী নারী, বাবু ইসলামসহ অন্যান্যরা। সংবাদ সম্মেলনে সোনিয়ে বেগম বলেন, ২০১৬ সালের ১৫ জুন ভাগ্নির বাসায় যান তিনি। পরে ভাগ্নি তার মেয়েকে স্কুলে নিয়ে গেলে বাসায় একা পেয়ে ভাগ্নি জামাই স্বপন জোড়পূর্বক তাকে ধর্ষণ করেন। ওই দৃশ্য স্বপন তার মোবাইলে ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিন বছর যাবত ধর্ষণ অব্যাহত রাখেন। এক পর্যায় তিনি রাজি না হওয়ায় ২০২৩ সালের ১, ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি স্বপন এবং ভাগিনা রুবেল, রিয়েল, নুরাল, কামরুল, রাজা, জনি ও তুহিনসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা ২০১৫ সালের মিথ্যা চুরির অভিযোগ দিয়ে তার স্বামী বাবু ইসলামসহ তাকে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন করে। নির্যাতনে তাদের হাত-পা ভেঙে যায় ও শরীরের চামড়া ফুটো করে গর্ত বানিয়ে দেয়। পরে তারা ২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জের গোলাম বাজার এলাকায় গিয়ে তার বড় বোনকে রাত ৯টা থেকে ভোর রাত সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নির্যাতন চালায়। পরে তারা বোনের বাসার আসবাবপত্র, নগদ টাকা, ভিডিও ক্যামেরা ও জমির দলিলপত্রসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়া যায়। এ সময় তারা বোনের কাছে ৯০ লাখ টাকা ও তার মেয়ে জামাই মাহবুবের কাছে ৮০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকার সিদ্দিক বাজারের বাসায় তার দুই মেয়েসহ তাকে ও তার স্বামীকে ধরে নিয়ে রাত ১১টা থেকে শুরু করে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরে তার স্বামীর হাত-পা বেঁধে তাকে পাশের রুমে নিয়ে গণধর্ষণ করে। তাদের ৩ দিন ওই বাসায় আটকে রাখার পর তারা সেখান থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তীতে গত ১৬ জানুয়ারি আদালতে একটি মামলা করেন। গত ১৮ জানুয়ারি আরেকটি মামলা করেন। এই মামলার খবর পেয়ে ধর্ষক স্বপন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা তাদের হত্যা করতে খুঁজছে বলে জানান তিনি।
আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছায়েরা খাতুন এর পিতা বাবু ইসলাম, মাতা সোনিয়া বেগম, নানী জাহানারা বেগম, বড় খালা নাসিমা বেগম, খালাতো বোন নাজনীন, ভাবী সাবিনা, শায়লাসহ প্রমুখ। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে তারা জানান। এ বিষয় আজ লালবাগ থানায় ভিকটিম এর পিতা বাবু ইসলাম একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।যার জিডি নং ৩৭৩ তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪।