নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঢাকা মঙ্গলবার (৮ জুন) জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা আছে-অনেক প্রশ্ন আছে। তারপরও আমরা জাতীয় পার্টির বক্তব্য নিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌছতে চাই। সেজন্য আমরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে শুরু করে সকল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করি। আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী। ১৪ জুলাই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর মৃত্যু বার্ষিকীর দিনে আমরা কোন নির্বাচন চাইনা। ঐদিনে উপ-নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত থাকলে নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অত্যান্ত মনোযোগ সহকারে আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের দাবির যৌক্তিকতা অনুধাবন করে পুর্নাঙ্গ কমিশনের বৈঠক করে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। ১৪ জুলাই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকীর দিনে ঘোষিত উপ-নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠকে স্মারকলিপি দিয়ে জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে এ কথা বলেন। এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু আরো বলেন, আগামী ১৪ জুলাই উপনির্বাচনের তারিখ দেয়া হয়েছে কিন্তু ঐদিন বাংলাদেশের প্রধান সংস্কারক ও দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মহানায়ক এবং জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী। এই দিনটি আমাদের জন্য একটি শোকের দিন, সবার জন্য মনোবেদনার দিন। তাই ১৪ জুলাই উপনির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করায় জাতীয় পার্টির নেতা, কর্মী এবং অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগি সংগঠনের সবাই মনোক্ষুন্ন হয়েছে। ১৪ জুলাই দিনভর ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে নানা কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় পার্টি। তাই জাতীয় পার্টির জন্য ১৪ জুলাই নির্বাচনে অংশ নেয়া দূরুহ হয়ে পড়বে। ঐদিন জাতীয় পার্টি নির্বাচনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকবেনা। তাই পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠক করে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু আরো বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে বিশ^াসী একটি দল। নব্বই সালের পটপরিবর্তনের পরে যখন জাতীয় পার্টির জন্য লেভেল প্লেইংফিল্ড ছিলোনাÑ তখন আমরা মিছিল-মিটিং করতে পারতাম না, পোষ্টার লাগাতে পারতাম না, জাতীয় পার্টির অফিস দখল করে নেয়া হয়েছিলো। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের জেলে আটক করা হয়েছিলো। তখন জেলে থেকেই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন যেকোন পরিস্থিতিতে সাংধিানিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে এবং যত প্রতিকূল অবস্থাই থাকুক নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে হবে। পল্লীবন্ধুর সিদ্ধান্তে আমরা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছি, জেলে থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা ৩৫টি আসনে বিজয়ী হয়ে সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলাম। আমরা নির্বাচনের রাজনীতি করি, আমরা নির্বাচনে বিশ^াস করি, নির্বাচনের মাধ্যমে পটপরির্বতনে বিশ^াস করি এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্বাচন করি। এর আগে বেলা ১১টায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি প্রেসিডিয়াম সদস্য- এ্যড মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ বেলাল হোসেন, প্রেস সেক্রেটারি-২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী, দফতর সম্পাদক-২ এম এ রাজ্জাক খান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সাহিত্য ও কৃষ্টি বিষয়ক সম্পাদক সুমন আশরাফ, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরল হুদা, নির্বাচন কমিশনের সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এবং নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (গণসংযোগ) এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।