পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, সরকার বদলের পরেও কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে। এই জন্য কি আমরা আন্দোলন করেছিলাম। একটা কথা মনে রাখবেন এই পঞ্চগড়ের মানুষের পেশি রিক্সা চালকের পেশি। আমরা রাস্তায় নামলে চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের মুলোৎপাটন করে ছাড়বো।
গতকাল শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, পঞ্চগড় সীমান্তবর্তী একটি জেলা। এই পঞ্চগড়ের ভাইয়েরা ভারতের সীমান্তে যাওয়ার আগেই বিএসএফ এর গুলি খেয়ে মরতে হয়। পঞ্চগড়ের মানুষ কি নিজের ভূমিতে থেকে গুলি খাওয়ার জন্য জন্মগ্রহণ করেছে? এর প্রতিটি গুলির বিচার ওই ফ্যাসিস্ট হাসিনা করতে পারেনি। আমরা পঞ্চগড়ের মানুষ স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ঐ খুনি হাসিনা থেকে শুরু করে যারা এই বিচারগুলো করতে দেয়নি, যারা ভারতের সেবাদাস হিসেবে ছিল, তাদের বিচার করতে হবে।
সারজিস আলম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আজকের পর থেকে এই পঞ্চগড় নিয়ে যদি কোনো বৈষম্য হয়, তাহলে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান-এই চার দেশের যে সীমান্ত, এই চার দেশের যে গলা, এই চার দেশের যে নিশ্বাস, এই চার দেশের যে হৃৎপিণ্ড, সেই হৃৎপিণ্ড তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা আমরা চিরতরে বন্ধ করে দেবো।
তিনি বলেন, সরকার বদলের পরও কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? এই জন্য কি আমরা আন্দোলন করেছিলাম? একটা কথা মনে রাখবেন, পঞ্চগড়ের মানুষের পেশি রিক্সাচালকের পেশি, ধান কাটার পেশি। আমরা রাস্তায় নামলে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের মূল উৎখাত করে ছাড়বো।
সারজিস আলম বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর বর্তমান বাংলাদেশের মানুষের যে আস্থা রয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর সেই আস্থা নেই। বাংলাদেশের এত এত মানুষ আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছে এখন সময় হয়েছে তার প্রতিদান দেওয়ার। বিগত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল তাদের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছে ফ্যাসিবাদী সরকারকে অপসারণ করতে, তারা কি পেরেছে? বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঈদের পর, পূজার পর বিভিন্ন প্রোগ্রাম দিয়ে চেষ্টা করেছে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের জন্য কিন্তু তারা পারেনি।
সারজিস আলম বলেন, আমরা আন্দোলনের সময় যেভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, আপনাদের সেভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিগত ১৬ বছরে সরকার যে কাজগুলো করেছে, যেভাবে আমাদের বোনদের ওপর নির্যাতন করেছে, আমাদের ভাই-বোনদের ওপর গুলি ছুড়েছে, রাস্তায় যেভাবে পশুপাখির মতো মানুষ মেরেছে, ট্রাকে করে ময়লার মধ্য দিয়ে আমাদের নিয়ে গেছে ঐ ডকুমেন্টসগুলো আপনাদের সংরক্ষণ করতে হবে। একটি জিনিস মনে রাখবেন, ঐ ফ্যাসিস্ট সরকার আপনাদের ইথিক্সগুলো ভুলিয়ে দিতে চাইবে। আপনি যদি এগুলো ভুলে যান তাহলে তারা আবার ক্ষমতায় বসতে পারবে। একটি জিনিস আপনাদের মনে রাখতে হবে, আগামী দিনে যারা শাসন করবে যারা রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেবে আবার যারা সরকার কায়েম করতে চাইবে তারা বৈষম্য আন্দোলনের ওই স্মৃতিগুলো মুছে দিতে চাইবে। আপনাদের কাজ হবে একটি ডকুমেন্টের মাধ্যমে হলেও আপনাদের সঙ্গে, আপনাদের পরিবারের সঙ্গে যা হয়েছে তা লিপিবদ্ধ করে রাখা।
সারজিস আলম বলেন, আমরা আন্দোলনের সময় যেভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, আপনাদের সেভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিগত ১৬ বছরে সরকার যে কাজগুলো করেছে, যেভাবে আমাদের বোনদের ওপর নির্যাতন করেছে, আমাদের ভাই-বোনদের ওপর গুলি ছুড়েছে, রাস্তায় যেভাবে পশুপাখির মতো মানুষ মেরেছে, ট্রাকে করে ময়লার মধ্য দিয়ে আমাদের নিয়ে গেছে ঐ ডকুমেন্টসগুলো আপনাদের সংরক্ষণ করতে হবে। একটি জিনিস মনে রাখবেন, ঐ ফ্যাসিস্ট সরকার আপনাদের ইথিক্সগুলো ভুলিয়ে দিতে চাইবে। আপনি যদি এগুলো ভুলে যান তাহলে তারা আবার ক্ষমতায় বসতে পারবে। একটি জিনিস আপনাদের মনে রাখতে হবে, আগামী দিনে যারা শাসন করবে যারা রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেবে আবার যারা সরকার কায়েম করতে চাইবে তারা বৈষম্য আন্দোলনের ওই স্মৃতিগুলো মুছে দিতে চাইবে। আপনাদের কাজ হবে একটি ডকুমেন্টের মাধ্যমে হলেও আপনাদের সঙ্গে, আপনাদের পরিবারের সঙ্গে যা হয়েছে তা লিপিবদ্ধ করে রাখা।
সারজিস আলম আরো বলেন, আমাদের বাবা-মায়েরা সারা জীবন আমাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ডাক্তার হতে হবে, ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। এই সমাজে যে পেশাগুলোর মর্যাদা আছে সেগুলো হতে হবে। আমাদের বাবা-মা কিংবা আমাদের অভিভাবকরা এই স্বপ্ন দেখাননি যে আমাদের ভালো রাজনীতিবিদ হতে হবে। আপনি বাংলাদেশে থেকে যা কিছু করেছেন, যে দাযত্বিগুলো পালন করছেন, যে নীতি সংবিধানে আছে, যে রুলস আপনি মেনে চলেন তার প্রত্যেকটি নির্ধারণ হয় ওই জাতীয় সংসদ থেকে। ওই জাতীয় সংসদে যারা বসে থাকেন তারা একজন রাজনীতিবিদ। সেই রাজনীতির জায়গায় যদি ভালো মানুষগুলো না যায় আপনি বাংলাদেশে যাই হন না কেন আপনাদের ঐ খারাপ মানুষগুলো দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। সেই জায়গা থেকে আপনি যদি চান দেশ ভালো চলুক তাহলে আজকের পর থেকে আপনাদের সন্তানদের শুধু ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ার এর পাশাপাশি আপনার একজন সন্তানকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে উঠতে বলুন, না হয় যোগ্য সৎ মেধাবী ন্যায়পরায়ণ রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে বলুন। কারণ সংসদে যে ভাগ্য নির্ধারণের জায়গা সেখানে রাজনীতিবিদরা ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাই দেশের ভাগ্য নির্ধারণে তাদের রাজনীতিতে আসতে হবে।
সভায় আরো বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, রাকিব রানা মাসুদ, আবু সাইদ লিয়ন, মিশু আলী সুহাস, সহসমন্বয়ক জহির রায়হান প্রমুখ।
সভায় আরো বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, রাকিব রানা মাসুদ, আবু সাইদ লিয়ন, মিশু আলী সুহাস, সহসমন্বয়ক জহির রায়হান প্রমুখ।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, মোকাদ্দেসুর রহমান সান, খোরশেদ মাহমুদ, মখলেছার রহমান, হাবিবুর রহমান শাওনসহ পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষ।
এর আগে পঞ্চগড় জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ভবনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়করা।
এর আগে পঞ্চগড় জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ভবনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়করা।
Tags: দল