বৃহস্পতিবার (১০ আগষ্ট) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তৌহিদুর রহমান ও মহাসচিব মোঃ বজলুর রহমান বাবলুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি পেশ করেন।
এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ দেশের সর্ব প্রথম গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনের জোট যাহা নব্বই দশকে গঠিত হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পাচ্ছি যে সরকারী ২৪ গ্রেডের অদক্ষ কর্মচারী ক্লিনারের ন্যূনতম মজুরী ১৫৮৫০ টাকা এবং ব্যাংকিং খাতে ২০২২ইং সালে ২৪০০০ টাকা ঘোষণা করে কার্যকর করা হয়েছে। গ্লোবাল লিভিং ওয়েজ কোয়ালিশন পোশাক খাতের জন্য ন্যূনতম মজুরী অনুমান করছে ২১৬৪৮ টাকা হওয়া দরকার। শ্রমিকদের ২০১৮ সালের মজুরী ৮০০০ টাকা, বিগত ২০১৮ সালে ১ ডলার=৮২ টাকা ছিল, সে হিসেবে তখন ৯৮ ডলার বেতন ছিল। ডলারের অবমূল্যায়নের কারণে বর্তমানে সরকারী রেট অনুযায়ী ১ ডলার=১০৬ টাকা হিসেবে বর্তমানে ৭৫—৪৭ ডলার পায়। গার্মেন্টস মালিকরা টাকা অবমূল্যায়নের কারনে ২৯% শতাংশ টাকা বেশী আয় করছেন। কিন্তু দ্রব্য মূল্যে চাপে যে শ্রমিকরা দিশেহারা হয়ে কোন রকমে জীবন—যাপন করেছেন। গার্মেন্টস মালিকরা ২৯% শতাংশ টাকা অবমূল্যায়নে সম্পূর্ন সুযোগ পেলেও শ্রমিকদেরকে ন্যূনতম আপদকালীন কোন মহার্ঘ ভাতা প্রদান করেননি যাহা অত্যান্ত অমানবিক। গণমাধ্যমে জানা যায় যে, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানীতে চীন কে টপকিয়ে শীর্ষে অবস্থান নিলেও বিশ্বের সবচাইতে কম মজুরীতে পোশাক শ্রমিকরা কাজ করে। বিভিন্ন দেশের পোশাক শ্রমিক যেমন চীন—২৬২ ডলার, ভারত—১২৮ ডলার, ইন্দোনেশিয়া—১৩৭ ডলার, কম্বোডিয়া—১৯৪ ডলার, মালয়েশিয়া—২৫০—২৭৩ ডলার, ফিলিপিন্স—২৪৪ ডলার, ভিয়েতনাম—১৬৮ ডলার, তুরস্ক—৩০৭ ডলার এবং বাংলাদেশ বর্তমান ডলারের মূল্যের ভিত্তিতে—৭৫.৫ ডলার মজুরী পাচ্ছে।
নিম্নতম মজুরী বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিবেক দ্বারা বিবেচনা করুন কিভাবে বিশ্ব—বাজারে পোশাক খাত রপ্তানীর অগ্রযাত্রা কে ধরে রাখবে যদি শ্রমিক তার নায্য মজুরী না পায়? এসময় বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত দাবিসমূহ পেশ করা হয়,
(১) বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে ৭ম গ্রেডের সহকারী গারেটর এর মজুরী ২৩,০০০/— (তেইশ হাজার) টাকা নির্ধারণের পাশাপাশি ৭টি গ্রেডের মধ্যে ৫ম এবং ৬ষ্ঠ গ্রেড বিলুপ্তির সুপারিশ করছি। (২) বাকী অন্যান্য গ্রেডে ১০%—১৫% ব্যবধান রেখে নতুন মজুরী কাঠামো প্রণয়ন করার দাবী করছি। (৩) ফুরণ ভিত্তিক/পিছ রেটের সোয়েটার শ্রমিকদের যে কোন কাজের স্টাইলের কাজ করার পূর্বে প্রতি পিছ কাজের মূল্য ঘোষণা সহ নিম্নতম মজুরী বোর্ডের ঘোষিত কোন গ্রেডের শ্রমিক হিসাবে গন্য করা হচ্ছে উহা নিয়োগপত্র/পরিচয় পত্রে উল্লেখের নির্দেশ কামনা করছি। (৪) ফুরণ ভিত্তিক/পিছ রেটের শ্রমিকদের সাধারণ কর্মঘন্টার পর ওভারটাইম করানো হলে সেখানে পিছ রেট এর ডাবল রেট দেয়ার সুস্পষ্ট বিধান গেজেটে কামনা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা কামনা করছি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, এম দেলোয়ার হোসেন, মাহতাবউদ্দিন শহীদ, ইলিয়াস উদ্দিন, তাহমিনা রহমান, নজরুল ইসলাম, ফজলুর রহমান ফজলু, জান্নাত ফাতেমা প্রমুখ।