নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করে উন্নত করতে হবে। পাশাপাশি শিল্পায়নও আমাদের দরকার। আর শিল্পায়নের ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, সেটা আমাদের ধরা দরকার। তার উপযুক্ত দক্ষ মানবসম্পদও আমাদের গড়ে তুলতে হবে।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সে লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা এবং এসব খাতে গবেষণা আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসসি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদানকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা আপনাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আপনাদের কাছে দেশের মানুষ যেন সহযোগিতা পায়, আপনাদের উদ্ভাবনী জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ যেন মানুষের কল্যাণে হয়, গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যাতে সমৃদ্ধ হয়, সেদিকে নজর দেবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের দেয়া রাজস্ব থেকে আপনাদের ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। যারা ফেলোশিপ পাচ্ছেন, সর্বোচ্চ দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
‘কারণ আমরা চাই দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তুলতে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবন, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করে উন্নত করতে হবে। পাশাপাশি শিল্পায়নও আমাদের দরকার। আর শিল্পায়নের ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, সেটা আমাদের ধরা দরকার। তার উপযুক্ত দক্ষ মানবসম্পদও আমাদের গড়ে তুলতে হবে।’
দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। অর্থনৈতিকভাবে আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পেরেছি। আমাদের বার্ষিক উন্নয়নের ৯০ শতাংশ আমরা এখন নিজেদের অর্থায়নে করতে পারি। বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে আমরা…আমেরিকা আসলে বন্ধ করেছিল বিশ্ব ব্যাংকের টাকা, কাজেই আমরা এটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নিজেদের অর্থায়নে আমরা এই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি।
‘এই যে বড় বড় প্রকল্পগুলো আমরা করছি, আজকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র অথবা পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় প্রজেক্ট, এখানে আমাদের বহু ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে বহু কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এর মাধ্যমে আমি মনে করি আমাদের দক্ষ জনবলও সৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু আমাদের আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ফেলোশিপ পাচ্ছেন তাদের সর্বোচ্চ দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করতে হবে। আমরা বড় বড় প্রকল্প করছি।
‘আগামী দিনের বাংলাদেশ, অর্থাৎ একচল্লিশের উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজে সকলকে মনোনিবেশ করতে হবে। কীভাবে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।’
গবেষণা না থাকলে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা যেত না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমি গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই, কিন্তু আমাদের দেশে বিজ্ঞানের এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা কম হচ্ছে।’
এসব খাতে গবেষণা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটাই পারে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে; আমাদেরকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে।’
ওই সময় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে বেশি বেশি গবেষণা করার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।