নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ব্রিটিশ বিরোধী আজাদী আন্দোলনের স্মরণীয় নাম যোগেন্দ্র নাথ মন্ডলকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ অপশাসন ও প্রতিবেশী সম্প্রদায়ের শোষণ থেকে চিরমুক্তির লক্ষ্যে তৎকালীন পাকিস্তান আন্দোলনে বাঙালি মুসলমানদের প্রধান সহযোদ্ধা ছিলেন তিনি। শনিবার ( ৯ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ বিরোধী আজাদী আন্দোলনের নেতা যোগেন্দ্র নাথ মন্ডলের প্রয়ান দিবস উপলক্ষে জাতীয় কবিতা মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৯০৪ সালে বরিশালে জন্মগ্রহণকারী তফসিলি বা নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের আলোড়ন সৃষ্টিকারী নেতা যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল, যিনি ‘বরিশালের যোগেন মণ্ডল’ নামেই সমধিক পরিচিত। বিভাগপূর্ব বাংলায় নমঃশূদ্র বা দলিত জাতির মুক্তি আন্দোলনে জীবন বাজি রেখে, কংগ্রেস ও হিন্দু মহাসভা নেতাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মুসলিম লীগের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে জিন্নাহর নেতৃত্বে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং নিজ সম্প্রদায়কেও ‘লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ শিখিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বোধ হয় যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলকে ইতিহাসের আর্কাইভে ধামাচাপা দিয়েই স্বস্তি খুঁজতে চায়; যদিও আপাতদৃষ্টিতে সব সময়ই মনে হয়, ইতিহাসশাস্ত্রই মুখ্যত দেশটির রাজনীতি ও সমাজজীবনকে আছর করে আছে। সাতচল্লিশপূর্ব সময়ে যোগেন মণ্ডল বাংলায় একদিকে যখন আম্বেদকরের শিডিউল ফেডারেশনের শাখা করছেন, তেমনি একই সময়ে দলিত-নমশূদ্রদের স্বাধীনতা-উত্তর রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার জন্য প্ররোচিত করছিলেন মুসলমানদের সঙ্গে মিলতে। মঞ্চের সভাপতি কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী’র সভাপতিত্বে ও সাইফুল ইসলাম শুভর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহন করেন এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জাগপা প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ভাইস চেয়ারম্যান এমদাদুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ সহ-সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম, নারী নেত্রী মিতা রহমান প্রমুখ। মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, ‘তফসিলি সমাজ ও মুসলমান সমাজের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। উভয় সম্প্রদায়ের খাওয়া-দাওয়া, শিক্ষা-দীক্ষা, আচার-আচরণও প্রায় একই। এই দুই সম্প্রদায়ের সাথে বর্ধিষ্ণু হিন্দুদের কোনো মিলও নেই, সম্পর্কও নেই। যোগেন বাবু অত্যন্ত জোরালো ভাষায় বলতে লাগলেন, বর্ধিষ্ণু হিন্দুরাও এতকাল ধরে তফসিলিদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে, তারা মুসলমানদের ওপরও সমান অত্যাচার করেছে।